Do not go where the path may lead, go instead where there is no path and leave a trail.

— Ralph Waldo Emerson

বাংলাদেশ ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে সেরা ও জনপ্রিয় ফুটবলার মোনেম মুন্না

বাংলাদেশ ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে সেরা ও জনপ্রিয় ফুটবলার মোনেম মুন্না

নারায়ণগঞ্জ জেলা দলের সাথে বাংলাদেশ জাতীয় দলের এক প্রীতি ম্যাচে হঠাৎ নারায়ণগঞ্জের কোচ ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরকে মাঠে নামিয়ে দেন। কোচের এমন হটকারী সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ গ্যালারীতে উপস্থিত বাফুফের উর্ধতন কর্মকর্তারা। সবাইকে অবাক করে নজরকাঁড়া পারফরম্যান্স করে সেই ১৪ বছর বয়সী কিশোর। সেদিনের সেই কিশোর বাংলাদেশ ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে সেরা ও জনপ্রিয় ফুটবলার মোনেম মুন্না।

১৯৮০-৮১ মৌসুমে পাইওনিয়ার ফুটবল লীগে নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন মোনেম মুন্না। এর পরের বছর যোগ দেন দ্বিতীয় বিভাগের দল শান্তিনগরে। পেশাদার ফুটবলের অভিষেকের পর আর পিছিয়ে ফিরে তাকাতে হয় নাই। তারপর কয়েক বছর ঢাকার আরো কয়েকটি ক্লাবে খেলেন তিনি।

নিজের ফুটবল প্রতিভা দিয়ের নজর কাড়েন ঢাকা আবাহনীর কর্মকর্তা দের।১৯৮৭ সালে যোগ দেন ঢাকা আবাহনীতে। ফুটবল ক্যারিয়ারে পুরোটায় ছিলেই আকাশী নীল শিবিরে। হয়ে উঠেছিলেন ঢাকা আবাহনীর পোস্টার বয় ও সমর্থক দের নয়নের মনি।আবাহনী আর মুন্না একে অপরের পরিপূরক ছিলেন। আবাহনী ছিলো তার পুরো হৃদয় জুড়ে।

ফুটবলার মুন্নার নাম ছড়িয়ে পড়েছিল দেশে বিদেশে। আবাহনীর হয়ে দুরন্ত ফর্মে থাকা অবস্থায় কলকাতা জায়ান্ট ইস্ট বেঙ্গলে নাম লেখান বাংলাদেশ ফুটবলের গোল্ডেন বয় মুন্না। ১৯৯১ এবং ১৯৯৩ সালে কলকাতা ইস্ট বেঙ্গল হয়ে জয় করেন লীগ শিরোপা ও ফেডারেশন কাপ। মুন্নার পায়ের জাদুতে বিহ্বল ইস্ট বেঙ্গল সাপোর্টাররা আজও খবর নেয় তাদের প্রিয় মুন্না দার।

১৯৯০ দশকে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুটবলার ছিলেন মোনেম মুন্না। বহুজাতিক কোম্পানি তৎকালীন লিভার ব্রাদার্স বর্তমানে ইউনিলিভার তাদের কোম্পানির ব্র্যান্ড প্রতিনিধি করেন। ৯০ দশকে বিটিভিতে মুন্নার অভিনয় করা বিভিন্ন বিজ্ঞাপন প্রচারিত হত।

১৯৯১ সালে আবাহনী থেকে ২০ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক পান যা ছিল সেসময়ে পুরো দক্ষিণ এশিয়ার খেলোয়াড়দের মধ্যে রেকর্ড।
১৯৯৭ সালে পেশাদার ফুটবলকে বিদায় জানান মোনেম মুন্না। প্রিয় বুটজোড়া খুলে রাখলেও আকাশি নীল জার্সির প্রতি ভালোবাসা থেকে আবাহনীর ম্যানেজার হিসাবে কাজ করে যান মুন্না। ১৯৯৯ সালে তিনি কিডনি রোগে আক্রান্ত হন। জটিল কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে কিডনি বিকল হয়ে যায় কিং ব্যাক মুন্নার। ছোটবোনের কিডনি তার দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়। ২০০৪ সালে দেহে মরণব্যাধি ধরা পড়ে। ২০০৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী সকাল ৬ টায় মারা যান এই কীর্তি ফুটবলার।

বাংলাদেশের জার্মান কোচ অটো ফিস্টার বলেছিলেন, “He was mistakenly born in Bangladesh ”
হহয়তো-বা কথাটি তিনি সত্যিই বলেছিলেন, আমার দেশ এইরকম প্রতিভাদের কদর করতে পারে না তাই এদেশে প্রতিভার আবির্ভাব তেমন একটা নেই!

What’s your Reaction?
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0

Leave a Reply