Don’t judge each day by the harvest you reap but by the seeds that you plant.

— Robert Louis Stevenson

কম্পিউটারের ইতিহাস ও প্রকারভেদ

কম্পিউটার
Computer শব্দটি গ্রিক শব্দ Compute শব্দ থেকে এসেছে। Compute শব্দের প্রাচীণ অর্থ হিসাবকরা, গণনাকরা, পরিমাপকরা বা ধারনাকরা। Computer শব্দের অর্থ গণনাকারীযন্ত্র।মূলতঃ এটি তৈরি করা হয়েছিল গণনার জন্য।কিন্তু বর্তমানে এটি জটিল ও কঠিন হিসাব নিকাশ

ছাড়া ও আরো অনেক কাজে ব্যবহার হচ্ছে। কম্পিউটারের কাজেরগতি হিসেবকরা হয় ন্যানো সেকেন্ডে।ন্যানো সেকেন্ড হল এক সেকেন্ডের একশ কোটি ভাগের একভাগ।ইলেকট্রনিক প্রবাহের মাধ্যমে এটি তার যাবতীয় কার্য সম্পাদন করে।

কম্পিউটার ও কাজ করার বৈশিষ্ট্য

কম্পিউটারের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল যে, এই যন্ত্রটি প্রোগ্রামযোগ্য। একে নির্দেশ দেওয়া হয় এবং প্রাপ্ত তথ্য ও উপাত্তের ভিত্তিতে সে নির্দেস অনুসারে কাজ করে ও ফলাফল প্রদান করে। আমরা এক সময়ে গাণিতিক সংখ্যাকে ক্যালকুলেটর প্রদান করে তার ফলাফল (যেমন যোগ

বিয়োগ গুন ভাগ)বের করতাম। ক্যালকুলেটরের চেয়েও বড় হিসাব নিকাশ সম্পন্ন করার জন্য কম্পিউটার যন্ত্রের ব্যবহার হতে শুরু করে। তবে এখন কম্পিউটার কেবল অঙ্কের হিসেব করে না। এই যন্ত্র সকল তথ্য উপাত্তকেই প্রক্রিয়া করে। কম্পিউটারের আরও একটা বৈশিষ্ট্য হল যে,

এই যন্ত্রটি বহুমুখী কাজের, বহু কাজ একসাথে করার এবং অনেক যন্ত্রের একক কবকল্প হিসেবে কাজ করে। দিনে দিনে এটি আর কেবল যন্ত্র থাকছে না, এটি হচ্ছে প্রযুক্তি, যা অনেক যন্ত্র বা প্রযুক্তির অংশ হচ্ছে। ক্রমশ এটি হয়ে উঠেছে অপরিহার্য এক টেকনোলজি।

এই যন্ত্রটির কাজ করার প্রধান ৩টি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে-

 ক) দ্রুত গতিতে কাজ করা, খ) নির্ভূলভাবে কাজ করা এবং গ) স্মৃতিতে কাজ জমা রেখে পরবর্তীতে সেই কাজ ব্যবহার করা বা জমা রাখা অসমাপ্ত কাজ পরবর্তীতে সমাপ্ত করা।

ক) দ্রুত গতিতে কাজ করাঃ

একটি অঙ্ক বা হিসেবের কাজ যদি বড় এবং জটিল হয়, তাহলে মানুষের পক্ষে হাতেকলমে এ রকম একটি অঙ্ক বা হিসেবের কাজ করতে কয়েক ঘন্টা বা কয়েকদিন লেগে যেতে পারে। এ ধরনের একটি অঙ্ক বা হিসেবের কাজ কম্পিউটার এক সেকেন্ডের এক লক্ষ ভাগের এক ভাগ সময়ের মধ্যে করে দিতে পারে।

আমরা সময়ের হিসাব করি সেকেন্ড, মিনিট এবং ঘন্টার এককে। কিন্তু কম্পিউটার এত দ্রুত কাজ করতে পারে যে শুধু সেকেন্ড হিসেবে এর গতি প্রকাশ করা সম্ভব নয়। কম্পিউটার একটি কাজ এক সেকেন্ডের একশত কোটি ভাগের এক ভাগ সময়ের মধ্যে করতে পারে।

সেকেন্ডর ক্ষুদ্রতম এককগুলো হচ্ছে নিম্নরুপ-

১ মিলি সেকেন্ড = ১ সেকেন্ডের এক হাজার ভাগের এক ভাগ।

১ মাইক্রো সেকেন্ড = ১ সেকেন্ডের দশ লক্ষ ভাগের এক ভাগ।

১ ন্যানো সেকেন্ড = ১ সেকেন্ডের একশত কোটি ভাগের এক ভাগ।

১ পিকো সেকেন্ড =  ১ সেকেন্ডের একলক্ষ কোটি ভাগের এক ভাগ।

খ) নির্ভূলভাবে কাজ করাঃ

কম্পিউটার কাজ করে তার ব্যবহারকারীর দেওয়া তথ্য, উপাত্ত এবং নির্দেশের ভিত্তিতে। ব্যবহারকারীর  দেওয়া তথ্য, উপাত্ত এং নির্দেশ সঠিক হলে কম্পিউটার নির্ভূল ফলপ্রদান করবে। ব্যবহারকারী ভূল তথ্য প্রদান করলে কম্পিউটার সঠিক ফল দেবেনা।


গ) স্মৃতিঃ

কম্পিউটার ছাড়া অন্যান্য কিছু ইলেকট্রনিক যন্ত্রে সীমিত স্মৃতি থাকে। কিন্তু কম্পিউটারের স্মৃতির ধারণ ক্ষমতার সঙ্গে এ সব ইলেকট্রনিক যন্ত্রের স্মৃতির তুলনা করা যায়না। কম্পিউটারের সহায়ক স্মৃতিতে বিপুল পরিমান তথ্য ধারণ করে রাখা যায়। বিপুল পরিমাণ লেখালেখির কাজ,

হিসেব-নিকেশের কাজ শব্দ ও ছবি, চলমান চিত্র বা ভিড়িও, কার্টুন ইত্যাদি কম্পিউটারের স্মৃতিতে ধারণ করে রাখা যায় বা জমা করে রাখা যায়। পরবর্তীতে সময়ে প্রযোজন অনুযায়ী স্মৃতিতে জমা করে রাখা এ সব বিষয় ব্যবহার করা যায়। স্মৃতিতে ধারন করে রাখা কোনো অসমাপ্ত

কাজ পরবর্তীতে স্মৃতি থেকে তুলে এনে সমাপ্ত করে আবার স্মৃতিতে রেখে দেওয়া যায়। কম্পিউটারের সঙ্গে স্মৃতি শক্তি যুক্ত হওয়ার পর অন্যান্য ইলেকটুনিক যন্ত্র থেকে কম্পিউটার বিশেষভাবে গুরুত্ব লাভ করে এবং মানুষের ব্যবহারিক জীবনে অপরিহার্য হয়ে উঠতে থাকে।

নির্বোধ যন্ত্রঃ

কম্পিউটার অবিশ্বাস্য দ্রুত গতিতে অনেক বড় এবং জটিল হিসেব নিকেশের কাজ নির্ভূলভাবে করতে পারলেও কম্পিউটারের নিজের কিন্তু কোনো বুদ্ধি নেই। কম্পিউটার নিজে বুদ্ধি খাটিয়ে কোনো কাজ করতে পারেনা। মানুষের তৈরি করে দেওয়া নির্দেশমালা অনুসরণ করেই

কম্পিউটার সবরকমের কাজ সম্পন্ন করে। নির্দিষ্ট করে দেওয়া নির্দেশমালার অতিরিক্ত একটি কাজও কম্পিউটার নিজের বুদ্ধি বিবেচনা খাটিয়ে করতে পারেনা। কম্পিউটারের কিছু কিছু কাজ দেখ মনে হতে পারে এ সব কম্পিউটার নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে করেছে। কিন্তু মোটও না। যে

সকল কাজ দেখে কম্পিউটারকে বুদ্ধিমান মনে হয় সেসব কাজের নির্দেশমালাও আসলে মানুষের তৈরি করে দেওয়া। একই রকম কাজ একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দিলেই কম্পিউটার আর করতে পারবে না। কারণ, মানুষের তৈরি করে দেওয়া যে সকল নির্দেশমালার ভিত্তিতে কাজ করে সে

সব নির্দেশমালা কম্পিউটারের স্মৃতিতে জমা থাকে। স্মৃতিতে জমা থাকা নির্দেশমালা র সঙ্গে মিল খুঁজে না পেলে কম্পিউটার কোনো তথ্য নিয়ে কাজ করতে পারেনা। কাজেই, অনেক গুণে গুণী হওয়া সত্ত্বেও কম্পিউটার অন্যান্য যন্ত্রের মতোই নির্বোধ।

কম্পিউটারের কাজ করার পদ্ধতিঃ

কম্পিউটার দিয়ে কাজ করানোর জন্য কম্পিউটারকে সেই কাজের তথ্য ও উপাত্ত প্রদান করতে হবে। তথ্য উপাত্ত দিয়ে কী করতে হবে সে বিষয়ে কম্পিউটারকে নির্দেশ দিতে হয়। প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তকে ব্যবহারকারীর নির্দেশ অনুয়ারী ব্যবহার করে কম্পিউটার ফল প্রদান করে। অর্থাৎ

কম্পিউটারেরকাজ করার ধাপ হচ্ছে ৩টি।

ক. ব্যবহারকারীর দেয়া তথ্য উপাত্ত ও নির্দেশ গ্রহণ করা (Input), খ. তথ্যের প্রক্রিয়াকরণ (Processing) করা এবং প্রক্রিয়াজাত তথ্য প্রদান করা বা প্রকাশ করা (output)।

ইনপুট ও আউটপুটের মধ্যবর্তী কাজ করার অংশকে কম্পিউটারের কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট (central processing unit=CPU) বলা হয়। CPU  এর প্রধান দুটি অংশ হচ্ছে RAM (Random access memory) বা অস্থায়ী স্মৃতি এবং ROM(Read only memory) বা স্থায়ী স্মৃতি।

কম্পিউটারের প্রকারভেদ ও তার বৈশিষ্ট্যঃ

কাজ করার পদ্ধতির দিক থেকে কম্পিউটার মুলত তিন প্রকার। যথা- এনালগ কম্পিউটার, ডিজিটাল কম্পিউটার এবং হাইব্রিড কম্পিউটার। 

এনালগ কম্পিউটার

যে কম্পিউটার একটি রাশিকে অপর একটি রাশির সাপেক্ষে পরিমাপ করতে পারে,তাই এনালগ কম্পিউটার। এটি উষ্ণতা বা অন্যান্য পরিমাপ যা নিয়মিত পরিবর্তিত হয় তা রেকর্ড করতে পারে।মোটর গাড়ির বেগ নির্ণায়ক যন্ত্র এনালগ কম্পিউটারের একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

ডিজিটাল কম্পিউটার

ডিজিটাল কম্পিউটার দুই ধরনের বৈদ্যুতিক ভোল্টেজ দ্বারা সকল কিছু প্রকাশ করা হয়। ভোল্টেজের উপস্থিতিকে ১ এবং অনুপস্থিতিকে ০ দ্বারা প্রকাশ করা হয় এটি যে কোন গণিতের যোগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারে এবং বিয়োগ,গুণ ও ভাগের মতো অন্যান্য অপারেশন যোগের

সাহায্যে সম্পাদন করে। আধুনিক সকল কম্পিউটার ডিজিটাল কম্পিউটার।

হাইব্রিড কম্পিউটার

হাইব্রিড কম্পিউটার হলো এমন একটি কম্পিউটার যা এনালগ ও ডিজিটাল কম্পিউটারের সর্বোত্তম বৈশিষ্ট্যগুলোর সমন্বয়ে গঠিত। এটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ব্যবহার করা হয়। সুতরাং বলা যায়, প্রযুক্তি ও ভিত্তিগত দিক থেকে এনালগ ও ডিজিটাল কম্পিউটারের আংশিক সমন্বয়ই

হচ্ছে হাইব্রিড কম্পিউটার। সাধারণত হাইব্রিড কম্পিউটারে তথ্য সংগ্রহ করা হয় অ্যানালগ পদ্ধতিতে এবং গণনা করা হয় ডিজিটাল পদ্ধতিতে। যেমন আবহাওয়া দপ্তরে ব্যবহৃত হাইব্রিড কম্পিউটার অ্যানালগ পদ্ধতিতে বায়ুচাপ,তাপ ইত্যাদি পরিমাপ করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে গণনা

করে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিয়ে থাকে।

কাজের দক্ষতা ও আকারের ভিত্তিতে ডিজিটাল কম্পিউটারকে ৪ ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন- সুপার কম্পিউটার, মেইনফ্রেম কম্পিউটার, মিনিফ্রেম কম্পিউটার এবং মাইক্রোকম্পিউটার বা পার্সোনাল কম্পিউটার।

সুপার কম্পিউটার

অত্যন্ত শক্তিশালী ও দ্রুতগতি সম্পন্ন কম্পিউটারকে সুপার কম্পিউটার বলে।এ কম্পিউটারের গতি প্রায় প্রতি সেকেন্ডে ১ বিলিয়ন ক্যারেক্টর।সুপার কম্পিউটারের সাহায্যে কোনো দেশের আদমশুমারির মতো বিশাল তথ্য ব্যবস্হাপনা করার মতো স্মৃতিভান্ডার বিশিষ্ট কম্পিউটার হচ্ছে

সুপার কম্পিউটার। CRAY 1, supers xllএধরনেরকম্পিউটার।

মেইনফ্রেম কম্পিউটার

যে কম্পিউটার টার্মিনাললা গিয়ে প্রায় একসাথে অর্ধশতাধিক ব্যবহারকারী ব্যবহার করতে পারে তাই মেইনফ্রেম কম্পিউটার বা মিনি কম্পিউটার।এটা শিল্প-বাণিজ্য ওগবেষণাগারে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

ট্যাবলেট কম্পিউটার

ট্যাবলেট কম্পিউটার একধরণের মাইক্রো কম্পিউটার।যা পামটপ কম্পিউটার নামে পরিচিত।এটি স্পর্শ পর্দাসম্বলিত প্রযুক্তি।এটি এন্ড্রোয়েড এবং উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে চলে।

মাইক্রো কম্পিউটার

মাইক্রো কম্পিউটারকে পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসি বলেও অভিহিত করাহয়।ইন্টারফেসচিপ (Mother Board) , একটিমাইক্রোপ্রসেসরcpu, ram, rom, hard disk etc.সহযোগে মাইক্রো কম্পিউটার গঠিতহয়।দৈনন্দিন জীবনের সর্বক্ষেত্রে এ কম্পিউটারের ব্যবহারদেখা যায়।

ম্যকিনটোস আইবিএম পিসি এ ধরনের কম্পিউটার।


বিভিন্ন প্রজন্মের কম্পিউটার

প্রথম প্রজন্ম (১৯৫১-১৯৫৯)

* আকারে বড় বিধায় প্রচুর তাপ উৎপাদনকারী;

* মেমরি অত্যন্ত অল্প;

* ভ্যাকুয়াম টিউব দিয়ে তৈরি;

* মেমরি চৌম্বকীয় ড্রামের;

* কোড ব্যবহার করে প্রোগ্রাম চালানোর ব্যবস্থা;

* এই কম্পিউটারের যান্ত্রিক গোলযোগ, রক্ষণাবেক্ষণ ও পাওয়ার খরচ বেশি

* এই প্রজন্মের কম্পিউটারে যান্ত্রিক ভাষায় প্রোগ্রাম লিখা হত।

দ্বিতীয় প্রজন্ম (১৯৫৯-১৯৬৫)

* এটিতে মডিউল ডিজাইন ব্যবহার করে সার্কিটের প্রধান প্রধান অংশগুলো আলাদা বোর্ডে তৈরি করা যেত;

* অধিক নির্ভরশীল, অধিক ধারণক্ষমতা এবং তথ্য স্থানান্তরের সুবিধা;

* সাইজে ছোট, গতি বেশি এবং বিদ্যুৎ ও তাপ উৎপাদন কম;

* ট্রানজিস্টর দ্বারা তৈরি ও মেমরি চুম্বক কোরের এবং

* অ্যাসেম্বলি ভাষায় প্রোগ্রাম লিখা হত।

তৃতীয় প্রজন্ম (১৯৬৫-১৯৭১)

* বিভিন্ন প্রকার উন্নত মেমরি ব্যবস্থার উদ্ভাবন;

* ব্যাপক একীভূত বর্তনীর ব্যবহার;

* সাইজ ছোট বলে বিদ্যুৎ খরচ কম 

* উচ্চ ভাষা দিয়ে প্রোগ্রাম লিখা তৃতীয় প্রজন্মের কম্পিউটার থেকে শুরু হয়।

চতুর্থ প্রজন্ম (১৯৭১- বর্তমান)

* উন্নত চিপ এর ব্যবহার ও ক্ষুদ্রাকৃতির কম্পিউটার;

* বিশাল পরিমাণ মেমরি ও অত্যন্ত গতি 

* টেলিযোগাযোগ লাইন ব্যবহার করে ডাটা আদান-প্রদান।

পঞ্চম প্রজন্ম (ভবিষ্যৎ প্রজন্ম)

* এই ধরণের কম্পিউটার প্রতি সেকেন্ডে ১০-১৫ কোটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।

* শব্দের মাধ্যমে যোগাযোগ করা যাবে। ফলে এই প্রজন্মের কম্পিউটার শুনতে পারবে এবং কথা বলতে পারবে। * এই প্রজন্মের কম্পিউটারের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থাকবে। ফলে কম্পিউটার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে তা সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যবহার করতে পারবে। * ভিজুয়্যাল ইনপুট বা ছবি থেকে

ডাটা গ্রহণ করতে পারবে।

অ্যাবাকাস

অ্যাবাকাস হচ্ছে আড়াআড়ি তারে ছোট্ট গোলক বা পুঁতি লাগানো চারকোণা কাঠের একটি কাঠামো। এখনকার কম্পিউটারের মত অ্যাবাকাসও সংখ্যাকে সংকেত বা কোড হিসেবে বিবেচনা করে- কাঠামোতে তারের অবস্থান ও তারে পুঁতির উপস্থিতি সংকেত নিরূপন করে। খ্রিস্টপূর্ব

৩০০০ সালে ব্যাবিলনে এটি আবিস্কার হয় বলে ধারণা করা হয়। অ্যাবাকাস দিয়ে সাধারণত যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ, বর্গ ও বর্গমূল নিরূপন করা যেত।

অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন

চার্লস ব্যাবেজ ১৮৩৪ সালে যেকোন প্রকার হিসাবকার্যে সক্ষম এরূপ একটি হিসাব যন্ত্রের পরিকল্পনা শুরু করেন। যাতে প্রোগ্রাম নির্বাহ ও পাঞ্চকার্ডে হিসাবকার্যের নির্দেশসমূহকে সংরক্ষণের পরিকল্পনা ছিল। এই যন্ত্রটি অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন নামে পরিচিত।

চার্লস ব্যাবেজ 

 চার্লস ব্যাবেজ কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক। তিনি ১৮৩৪ সালে আধুনিক কম্পিউটারের মত নিয়ন্ত্রণ অংশ, গাণিতিক ও যৌক্তিক অংশ, স্মৃতি অংশ এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্য সম্বলিত অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন নামে একটি মেকানিক্যাল কম্পিউটারের পরিকল্পনা

করেছিলেন। চার্লস ব্যাবেজের এই যন্ত্রটি আধুনিক কম্পিউটারের পূর্বসূরি হয়ে আছে বলে চার্লস ব্যাবেজকে কম্পিউটারের জনক বলা হয়।

প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রামার 

ইংরেজ কবি লড বায়রনের কন্যা অ্যাডা অগাস্টাকে প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রামার হিসেবে বিবেচনা করা হয় । কারণ তিনিই আধুনিক কম্পিউটারের পূর্বসূরি অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন-এর জন্য প্রোগ্রাম রচনা করেন।

১৯৪৫ সালে প্রখ্যাত গণিতবিদ জন ভন নিউম্যান সর্বপ্রথম মেমরিতে রক্ষিত প্রোগ্রাম নির্বাহের ধারণা প্রদান করেন।

 কম্পিউটার আবিস্কার করেন হাওয়ার্ড এইচ একিন। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও আইবিএম এর যৌথ উদ্যোগে এবং হাওয়ার্ড এইচ একিন-এর তত্ত্বাবধানে ১৯৪৩ সালে মার্ক-১ নামে একটি পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল কম্পিউটার নির্মিত হয়। এজন্য হাওয়ার্ড এইচ একিন কে

কম্পিউটারের আবিস্কারক বলা হয়।

১৯৪৮ সালে আমেরিকার বেল ল্যাবরেটরিতে উইলিয়াম শকলে, জন বার্ডিন এবং এইচ ব্রিটেন সম্মিলিতভাবে ট্রানজিস্টর তৈরি করেন।

টেক্সাস ইন্সট্রুমেন্ট- এর জ্যাক কিলবি ও ফেয়ারচাইল্ড- এর রবার্ট নয়েস ১৯৫৮ সালে আইসি তৈরি করেন।

 ড. টেড হফ ১৯৭১ সালে (প্রথম মাইক্রোপ্রসেসর ইন্টেল- ৪০০৪) মাইক্রোপ্রসেসর তৈরি করেন।

তড়িৎ প্রকৌশলী এইচ এডওয়ার্ড রবার্টসকে মাইক্রোকম্পিউটারের জনক বলা হয়। তিনি ১৯৭৫ সালে অলটেয়ার-৮৮০ নামে প্রথম মাইক্রোকম্পিউটার তৈরি করেন। এজন্য তড়িৎ প্রকৌশলী এইচ এডওয়ার্ড রবার্টসকে মাইক্রোকম্পিউটারের জনক বলা হয়।

১৯৮১ সালের ১২ আগস্ট থেকে বের হয় পার্সোনাল কম্পিউটার।

 ১৯৭৫ সালের ফেব্র“য়ারি মাসে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়- এর ছাত্র বিল গেটস ও তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ওয়াশিংটন স্টেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পল অ্যালেন ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি-এর জন্য বেসিক প্রোগ্রাম লিখেন। পল অ্যালেন বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করে ম্যাসচুস্টেস ইন্সটিটিউট

অব টেকনোলজিতে যোগদান করলেও বিল গেটস সম্পূর্ণভাবে কম্পিউটার জগতে প্রবেশ করেন এবং ১৯৭৭ সালে মাইক্রোসফ্ট কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন।

১৯৭৬ সালে স্টিভ জবস ও স্টিফেন উযনিয়াক মিলে অ্যাপল-১ কম্পিউটার তৈরি করেন। এর পরবর্তী বছরই তারা অ্যাপল কম্পিউটার কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন।

What’s your Reaction?
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0

Leave a Reply