আমি আলো, নিশার জানালার চারিপাশে ঘুর ঘুর করি। জানালা বন্ধ থাকলে আমার খুব মন খারাপ করে। জানালা খুললেই নিশাকে দেখতে পাই। সদ্য ফোটা গোলাপ কুঁড়ির মতো ওর ঠোঁটের পাপড়ি। চোখ দুটি নীল সমুদ্র। একরাশ কালো চুলের ঢেউ। আমি বিস্মিত হই। তার কাছে প্রেম প্রার্থনা করি।
নিশা চিঠি লিখে জানালার ফাঁক দিয়ে উড়িয়ে দেয়। আমি কুড়িয়ে নিই ।প্রত্যাশার কত বিবরণ লেখা থাকে চিঠিতে। আমি পূর্ণ করার অঙ্গীকার লিখে দিই।
নিশা জানালা খোলে । আমাকে ইশারায় ডাকে। তারপর আমার হাতখানা ধরে সে টানতে থাকে ভেতরের দিকে। সে কী টান! আমি স্থির থাকতে পারি না। তবে নিশা কি ভারতবর্ষ?
আমি জানালায় প্রবেশের চেষ্টা করি, কিন্তু পারি না। আটকে যাই। লোহার শিকগুলি প্রতিরোধ গড়ে তোলে। আমাকে তখন নিরুপায় পাকিস্তান মনে হয়।
এপার ওপার । দুই হাত ধরে দুইপাশে বসে থাকি দুজন। দু জোড়া ঠোঁট কাছাকাছি গিয়েও মিলিত হতে পারে না। মাঝখানে কিছুটা শূন্যতা তৈরি হয়। উষ্ণ হাতের স্পর্শে উপলব্ধি হয় হৃদয়ের কম্পন।
—নিশা, তবে কী হবে আমাদের?
—আলো, তুমি ভেঙে দাও জানালা!
—ভাঙা বড়ো কঠিন যে!
—প্রেমের শক্তি অফুরান!
দুজনের মিলিত প্রয়াসে জানালার শিকগুলি বাঁকিয়ে দিতে লাগলাম। নিশা ও আলো আজ মিলিত হয়ে একটিই সত্তা হতে চাইল। হয়তো এভাবেই জানালা মিলনের বাধামুক্ত হবে। তখন কেবলই আমার মনে হতে লাগল, ভারতবর্ষ একটাই দেশ। পাকিস্তান বলে কিছুই ছিল না কোনওদিন।
Writer: তৈমুর খান
What’s your Reaction?
+1
+1
+1
+1
+1
+1
+1