সভ্যতা যত এগিয়ে যাচ্ছে আমরা কি তত সভ্য হয়ে উঠছি? সভ্য হওয়া কাকে বলে আমরা কি জানি? এই যে সন্তান-সন্ততি, বিবাহিতা স্ত্রী, ধর্মচর্চা, বৈধ সঙ্গম, সামাজিক জীবন-যাপন এসব কি সভ্যের পরিচয়? সমাজ তথা রাষ্ট্রের নৈতিক অনুশাসনে যে মূল্যবোধের সৃষ্টি হয়েছে এবং প্রতিমুহূর্তে যে মূল্যবোধকে আমরা রক্ষা করে চলেছি; প্রচলিত এই বিশ্বাস ও ধ্যান-ধারণাকেই সভ্যতার মানদণ্ড ভাবা যেতে পারে। কিন্তু আমাদের মধ্যে এক অমার্জিত বা ভালগার বোধ সবসময়ই নিহিত থাকে। তা খুব সামাজিক নয় অথচ ক্রিয়াশীল। জীবনযাপনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তার উপস্থিতি অনুভব করি। কদর্য বা অশ্লীলতার দোহাই দিয়ে তাদের দমন করি। কিন্তু সম্পূর্ণরূপে দমন করা সম্ভব হয় না। অবদমিত হয়ে তা বেরিয়ে আসে আমাদের নানা কর্মে, রূপকে, শিল্পে-সাহিত্যে। সৃষ্টির এক একটি ক্ষেত্রে তা বিভিন্নভাবে রূপ গ্রহণ করে। Naturalism, Surrealism, Postmodernism প্রভৃতিতে সেগুলি রূপায়িত হয়। প্রবৃত্তির অমোঘ রসায়ন আদিমতায় শিকড় রেখে বহুবিস্তৃত করে তার শাখা-প্রশাখা। vulgar থেকে Noun Form-এ Vulgarity শব্দটির অক্সফোর্ড অভিধানে অর্থ করা হয়েছে: The fact of being rude or not having good taste, a rude object, picture etc. অর্থাৎ এটি একটি এমনই বিষয় যা রূঢ় অথবা যাতে সুরুচির লেশমাত্র নেই। একটি কুরুচিসম্পন্ন বিষয় অথবা ছবি। এই কুরুচি বা রূঢ়তা আমাদের জীবনের সিংহভাগ জুড়ে রয়েছেে। বাইরে থেকে তারা সবসময় বোঝা যায় না, কিন্তু নিজেরা টের পাই।
সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় হিসেবেই আমরা এই ভালগারিটিকে দেখি। প্রচলিত নৈতিকতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ উদাসীন হয়ে ন্যায়-অন্যায় বোধ হারিয়ে যায় এবং পাপ ও পরিণাম সম্পর্কে কোনো ভীতি বা অনুশোচনা জাগে না। তখনই এই অমার্জিত প্রবৃত্তির নগ্নতার প্রকাশ পায়। Naturalism-এ দেখা যায় অনাবৃত অবিকল ক্লেদাক্ত জীবনের ছবি। তেমনি Surrealism-এ দেখি অবদমিত ইচ্ছারডড প্রকাশ যা চেতন-অবচেতনের সীমারেখা মুছে ফেলে অতৃপ্ত কামনা-বাসনার পূর্ণতায় তৎপর হয়ে স্বপ্নচারী জীবন প্রত্যাশায় পাড়ি জমায়। আবার Postmodernism-এ তেমনি মূলের উৎসে পৌঁছাতে চায়। অর্থাৎ একপ্রকার আদি সত্তার সন্ধানই বলা চলে। প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘পাঁক’ উপন্যাসে বাস্তব জর্জর ক্লেদাক্ত জীবনের ছবি প্রকৃতিবাদের নির্ণীত প্রজ্ঞা থেকেই রচিত। অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের উপন্যাস ‘বেদে’-ও প্রকৃতিবাদ থেকে উঠে এলেও extra-marital sexual intercourse দেখা গেছে নায়ক নায়িকার মধ্যে। নায়ক কাঞ্চন ছ’জন নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছে। বিবাহ বহির্ভূত কামতাড়িত এই জীবনের ছবি ভালগার-ইজমের পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, কেননা কোনো ক্ষেত্রেই নায়কের তৃপ্ততা আসেনি। বরং উদ্ভ্রান্ত জীবনের এক চরম অবক্ষয় ও অসভ্যতা দেখা গেছে তার মধ্যে। সমরেশ বসুর উপন্যাস ‘প্রজাপতি’তেও চূড়ান্ত মনোবিকারের শিকার নায়ক সুখেনকেও ভালগারিটিতে আক্রান্ত হতে দেখা গেছে। জিনাকে নিয়ে আখের ক্ষেতে ধর্ষণ করতে করতে তাবৎ সভ্যতার মানুষেরই ভদ্রতার আড়ালে তাদের এই অভব্য প্রবৃত্তির পরিচয় দিয়েছে: “আমাদের এই শহরেই অনেক নামী লোকের কথা জানি, কেউ নেড়ি, লুকিয়ে লুকিয়ে কেউ বাঘা বাঘা ভাবে, লক্ষ্য ঠিক একদিকে, ঝাঁপিয়ে পড়বেই, কোন কিছু মানবে না। আমিও মানিনি, মানতামও না।” নায়কের এই না মানার পরিচয় পুরো উপন্যাস জুড়েই দেখা গেছে। কিন্তু কোথাও সুখের লেশমাত্র নেই। শরীর দলে পিষে কিছুই পায়নি সে। আদিমতার সঙ্গে অমার্জিত-র মূল পার্থক্য হল: আদিমতা অন্ধকারাচ্ছন্ন চেতনা; কিন্তু অমার্জিত হল, আলো-কে আড়াল করা; অর্থাৎ সচেতনায় আদিমতাকেই লালন করা। আর সেই প্রকাশ এর মধ্যেই থাকে perversion. সুতরাং Vulgar ও Perversion-এ রূপান্তরিত হয়ে যায়।
ন্যুট হামসুন শক্তিশালী লেখক হওয়া সত্ত্বেও তীব্র কামের আবেগে আপ্লুত। তাঁর লেখনীতে মানুষের অন্বেষণ নেই; জান্তব রিপুপ্রধান দিক ফিরে ফিরে এসেছে। তিনি নীটশের মতবাদের সমর্থক। আলবেয়ার কামুর ‘The outsider’ উপন্যাস এক কিম্ভূতকিমাকার জীবনের আলেখ্য। কাহিনির নায়ক মার্সোল একজন নিঃসঙ্গ সমাজ বহির্ভূত চরিত্র। মানবিক আবেগ তাকে স্পর্শ করেনি। জেন অস্টেনের ‘Pride and Prejudice’ উপন্যাসে জর্জ উইক হ্যাম একজন মিলিটারি অফিসার। কিন্তু ভদ্রতার আড়ালে অশ্লীলতা ও অমার্জিতকেই লালন করেছে। বেনেট পরিবারের দুই মেয়ে লিডিয়া লুকাস ও এলিজাবেথ বেনেটকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে তাদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করে। এমনকী লিডিয়াকে নিয়ে স্কটল্যান্ড এর একটি শহর three pegion-এ পালিয়ে যায়। অবৈধ সম্পর্ক বহুদিন কাটানোর পরও তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে। এলিজাবেথ বেনেট হিরোইন। একেও প্রলুব্ধ করে মিস্টার চার্লস বিংলের কাছ থেকে সরিয়ে কৌশলে অবৈধ সম্পর্ক করে। কিন্তু সব প্ল্যান ভেস্তে যায়। বিয়ে করতে বাধ্য হয় লিডিয়াকে। নৈতিকতাহীন চরিত্রগুলির সর্পিল ও বহুগামী দিকগুলি তাদের লক্ষ্যভ্রষ্ট করে দেয়।
বার্নার্ড শ এর নাটক Arms And The Man এরকমই সমাজ বিহর্গিত নায়ক-নায়িকার আচরণে সমৃদ্ধ। গল্পের হিরোইন রাইনা এবং রোমান্টিক হিরো ছিল সার্জিয়াস। love and war সম্পর্কে তাঁর খুব উচ্চ ধারণা ছিল। কিন্তু ঘটনাক্রমে সার্জিয়াস রাইনার বাড়ির পরিচারিকা লৌকার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক করে। রাইনার কাছে তা সম্পূর্ণ গোপন রাখে। আবার রাইনাও সার্জিয়াসের অনুপস্থিতিতে ব্লানসলির সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। যদিও সে তখনও অচেনা ব্যক্তি তবুও জলের পাইপ দিয়ে ওঠে তার ঘরে রাত কাটায়। শেষ পর্যন্ত সার্জিয়াস লৌকাকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়। রাইনা বিয়ে করে ব্লানসলিকে। নিজেদের কৃতকর্মের জন্য সব কিছু ভুল হয়ে যায় যা একেবারেই অযাচিত। লৌকাই কথাগুলি ফাঁস করে দেয়। যৌন তাড়না ও রুচির এই প্রবহমান পরিবর্তন ও বিকৃতি অমার্জিত জীবনবোধেরই পরিচায়ক।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বহু গল্পের চরিত্রেই atrocities caused দেখিয়েছেন। এগুলির মধ্যে অন্যতম হল ‘প্রাগৈতিহাসিক’ গল্পটি। গল্পের নায়ক ভিখু ডাকাত থেকে কীভাবে ভিখিরিতে পরিণত হয়েছে এবং যেকোনো অবস্থাতেই মানুষ খুন থেকে নারী ধর্ষণ পর্যন্ত অবলীলায় চালিয়ে গেছে তাতে কোনো সময়েই তার অনুশোচনা আসেনি। বরং এক ধরনের উল্লাস অকৃতজ্ঞতা এবং বর্বরতা পশুত্বকে ছাড়িয়ে গেছে। বৈকুণ্ঠ সাহার গদিতে ডাকাতি করতে গিয়ে তার মেজ ভাইটির গলা দা-এর এক কোপে দু-ফাঁক করেছে। তারপর জঙ্গলে লুকিয়ে থেকে সাপ, জোঁক ও শিয়ালের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করেছে। দূর সম্পর্কের আত্মীয় পেহ্লাদ বাগদির আশ্রয়ে থেকেও তার কোনো কৃতজ্ঞতা নেই। ডানহাতটি বর্শার খোঁচায় শুকিয়ে নষ্ট হয়ে গেলেও উপরের মাচা থেকে নেমে এসে পেহ্লাদের বউয়ের হাত চেপে ধরে তার সঙ্গে যৌনক্রিয়া করতে চেয়েছে। পেহ্লাদ তাকে বের করে দিলে মধ্যরাতে তার ঘরে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে গেছে। লেখক ভিখুর পরিচয় দিতে গিয়ে এক জায়গায় লিখেছেন: “তাড়ির দোকানে ভাঁড়ে ভাঁড়ে তাড়ি গিলিয়া সে হল্লা করিত, টলিতে টলিতে বাসির ঘরে গিয়া উন্মত্ত রাত্রি যাপন করিত, আর মাঝে মাঝে দল বাঁধিয়া গভীর রাত্রে গৃহস্থের বাড়ি চড়াও হইয়া সকলকে মারিয়া কাটিয়া টাকা ও গহনা লুটিয়া রাতারাতি উধাও হইয়া যাইত। স্ত্রীর চোখের সামনে স্বামীকে বাঁধিয়া মারিলে তাহার মুখে যে অবর্ণনীয় ভাব দেখা দিত, পুত্রের অঙ্গ হইতে ফিনকি দিয়া রক্ত ছুটিলে মা কেমন করিয়া আর্তনাদ করিয়া উঠিত, মশালের আলোয় সে দৃশ্য দেখা আর আর্তনাদ শোনার চেয়ে উন্মাদনাকর নেশা আর কী আছে?” এই ভিখু ভিখিরি হয়েও থকথকে ঘা যুক্ত ভিখারিনীডড পাঁচীকে বসির মিঞার কাছ থেকে কেড়ে নিতে রাত্রের অন্ধকারে তার কুঁড়ে ঘরে উপস্থিত হয়েছে এবং লোহার ছুঁচলো শিক বসিরের তালুতে ঢুকিয়ে তাকে হত্যা করেছে। পাঁচীও পায়ের ঘা ভালো করতে চায়নি। ভিখিরির পেশায় এটাই তার বড় বিজ্ঞাপন। অবশেষে ভিখুর পিঠে চড়ে প্রাগৈতিহাসিক অন্ধকার সঙ্গে নিয়েই তারা পৃথিবীতে নতুন শিশুর জন্ম দিতে চলেছে। ভিখু কখনোই পরের ভালো করেনি। কেউ ভিক্ষা না দিলে তাকে গালি দিয়েছে। অন্যের সুখ দেখলে তার ঘরে আগুন দিতে চেয়েছে। মানুষ মারাও তার কাছে খেলাধূলার মতো। লেখক একটি বাক্যে তাদের জীবনের অমার্জিত-র পরিচয় চূড়ান্তভাবে নির্ণয় করেছেন যেখানে আদিমতাও মিশে গেছে: “তাহাদের নীড়, তাহাদের শয্যা ও তাহাদের দেহ হইতে একটা ভাপসা পচা দুর্গন্ধ উঠিয়া খড়ের চালের ফুটা দিয়া বাহিরের বাতাসে মিশিতে থাকে।” আমাদের সমাজের বাতাসও এইরকম দুর্গন্ধে এখনও কলুষিত হয়।
বর্তমান সময়েও যেসব গল্প-উপন্যাস লেখা হচ্ছে সেসব ক্ষেত্রেও অমার্জিত অশ্লীলতার ছড়াছড়ি। ভালগার কখনো কখনো পারভার্সনে পরিণত হচ্ছে। আসলে আমাদের জীবনচর্চায় এর আধিক্য হেতুই সাহিত্যেও তা প্রতিফলিত হচ্ছে। সংবাদপত্রে প্রতিনিয়ত এইসব খবরগুলি আমাদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। কে বউকে ডিভোর্স দিয়ে শাশুড়িকে নিয়ে চলে যাচ্ছে এবং তার শরীরে যৌন তৃপ্তি খুঁজছে। কেউ নিজের মেয়েকে বন্দি করে দিনের পর দিন যৌন শোষণ করছে। নয়ডার কাণ্ড তো আরও এক ধাপ এগিয়ে। বাড়ির প্রভু ও চাকর মিলে বাচ্চা মেয়েদের প্রলুব্ধ করে তাদের সঙ্গে অসম যৌনক্রিয়ায় মত্ত হয়ে শেষে হত্যা করে কিংবা তাদের লিভার ভক্ষণ করে নরখাদকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছে। এইসব মানসিক বিকৃতি ও যৌনতৃপ্তির পর্যায়ক্রমিক কৌশলগুলিই আমাদের সাহিত্যও চিনিয়ে দিচ্ছে ভালগারিটিতে কতটা আমরা আক্রান্ত। সঙ্গীতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দীর্ঘ উপন্যাস ‘শঙ্খিণী’-তে বারবার এইসব প্রসঙ্গ এনেছেন। উপন্যাসটি পুরোপুরি লিঙ্গকেন্দ্রিকতার স্থূল জৈবিকতায় আবদ্ধ। বিধবা বন্ধুপত্নীর শরীরে ‘তৃপ্ত’ হচ্ছে বহুগামী পুরুষের ‘পৌরুষ’। উদ্দাম যৌনক্রিয়ার রগরগে মনন বিকৃতি বাস্তব সমাজেরই ঘটনায় সমৃদ্ধ।
কৃত্তিবাস পত্রিকার ভূমিকায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সম্পাদনা প্রসঙ্গে ‘নগ্ন সরস্বতী’র কথা লিখেছেন। নির্জন রাত্রে সরস্বতীর ঊরু, জঙ্ঘা ও স্তন স্পর্শ করে তাঁর লিঙ্গোত্থান ঘটেছে। সরস্বতী দেবী নন তখন স্রেফ নারী, রমণী মাত্র। তার স্তন-ঊরু-জঙ্ঘা যৌন আধারের এক একটি অঙ্গ মাত্র। প্রচলিত নীতিবোধের উল্লঙ্ঘন ও মনন বিক্রিয়াকে কবিও উপেক্ষা করতে পারেননি। ঠিক এমনই কবি সুবোধ সরকারের লিঙ্গমনোলগের কবিতাও:
“কখনো ছ’ইঞ্চি আমি, আমি ক্রোধে গুম
নিশিতে বিরাজ করি, আমি মহাদ্রুম।
দু’পায়ের ফাঁকে আমি, যেন ব্ল্যাকহোল
দেবী দুর্গা মুখ দেয়, বাজা রে মাদল।”
আসলে ভালগারিটি কখনও প্রকাশিত হয়, কখনও হয় না। সুপ্ত অবস্থায় শিল্প-সাহিত্যের মোড়কে তা বেরিয়ে আসে। আমাদের মধ্যে আদিমতা যেমন সত্য, অমার্জিততাও তেমনই সত্য। জৈবিকক্রিয়া থেকে তাদের আলাদা করা যায় না। আগুনে আমরা হারাতে চাই না, ইনটুইশন আমাদের অনবরত সতর্ক করে। কিন্তু তবুও হাত পোড়ে। ভালো হওয়ার ছলা-কলাও পর্যবসিত হয় অসামাজিক অসমর্থিক ক্রিয়াকাণ্ডে। তা কখনও অশ্লীল, কখনও অসভ্য। ফ্রয়েডীয় তত্ত্বে সবকিছুরই ব্যাখ্যা সম্ভব। অষ্টাদশ শতাব্দীর কবি এস. টি কোলরিজ ‘Christabel’ কবিতায় পবিত্র-আত্মা ও শয়তানকে দুটি চরিত্রের রূপকে তুলে ধরেছেন। পবিত্র আত্মার প্রতীক ক্রিস্টাবেল একজন মা মরা কুমারী মেয়ে। গভীর রাতে বীরের শুভ কামনায় সে ওক গাছের নিচে প্রার্থনা করতে যায়। হঠাৎ সেখানে সুন্দরী নারীর ছদ্মবেশে শয়তানের প্রতীক জেরাল্ডিন উদয় হয়। যুদ্ধে আহত ও লুন্ঠিত হওয়ার নানা ছলনায় সে অভিনয় করে। ক্রিস্টাবেল সরল বিশ্বাসে তাকে আশ্রয় দেয়। রাতে দুর্গে পৌঁছালে সে প্রদীপ নিভিয়ে দেয় এবং ক্রিস্টাবেলকে ঘুমিয়ে পড়তে বলে। তখন জেরাল্ডিনও পোশাক ছেড়ে প্রার্থনা করতে শুরু করে। ক্রিস্টাবেল তাকে দেখে আঁতকে ওঠে। বুঝতে পারে তার ছলনা। কবির ভাষায় এর বর্ণনা পাই:
“Yet Geraldine nor speaks nor stirs;
Ah! what a stricken look was hers!
Deep from within she seems half-way
To lift some weight with sick assay,
And eyes the maid and seeks delay;
Then suddenly, as one defied,
Collects herself in scorn and pride,
And lay down by the Maiden’s side!—
And in her arms the maid she took,
Ah wel-a-day!
And with low voice and doleful look
These words did say:”
অবশেষে জোর করে ক্রিস্টাবেলের শ্লীলতাহানি করে। এই ক্রিস্টাবেল ও জেরাল্ডিন উভয়ই মানুষের মধ্যে বিরাজ করে। কার কোন্ রূপটি কখন প্রকাশিত হয় তা আমরা জানি না। সাহিত্য-শিল্পে এই উভয়েরই সমাবেশ।
Writer: তৈমুর খান