কৈশোরে সমাজ ও পরিবারের প্রভাব

	
	

























































			
			











সদুপদেশ গ্রহন করার জন্য অন্তরে আগ্রহ সৃষ্টি না হওয়া এবং নিজের অভিমত খণ্ডিত হতে দেখেই অন্তরে ক্রোধের সৃষ্টি হওয়ার নামই অহংকার। আত্মপ্রশস্তি ও অহংকার মানুষকে নিম্নস্তরে নিয়ে যায়।

— ইমাম গাজ্জালি (রহঃ)

কৈশোরে সমাজ ও পরিবারের প্রভাব

কৈশোর  জীবন হল শৈশব ও যৌবনের সন্ধিস্থল।শৈশব ছাড়িয়ে কৈশোরে সদ্য পা রাখা কিশোর- কিশোরীর ওপর  পরিবারের  জীবনযাত্রা ও পরিবেশ পরিস্থিতি গুরুতর প্রভাব ফেলে। প্রতিটি পরিবার ভিন্ন,তাদের জীবনযাত্রা ও ভিন্ন।তাই পরিবারগুলোর সন্তানদের মধ্যে অনেক পার্থক্য থাকে।

যেমন মধ্যবিত্ত পরিবারে সন্তান ভবিষ্যতে কি করবে সে চিন্তা করে বড় করা হয়।পরিবার চায় সে স্কুল এ জাবে,ভাল রেসালট‍ করবে,কোনও আক্রমণাত্মক কাজে অংশগ্রহণ করবেনা।ভবিষ্যৎ জীবন গড়ে তোলার জন্য প্রতিযোগিতা করবে।কোথাও নিজেদের ক্ষতি করবেনা।

অপরদিকে, নিম্নবিত্ত পরিবারে সন্তানরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ছোটবেলা থেকে ঘরের কাজে বেশি সময় দেয়। এটাই  তাদের নিয়তি জেনে বড় হয়। কৈশোরে তাদের ওপর পবিবারের নিয়ন্ত্রন কম থাকে।

নানা সমীক্ষায়ে দেখা গেছে, কিশোর-কিশোরীর মানসিক ও শারিরিক বিকাশের ক্ষেত্রে বিভিন্ন দিকের অভিযোজন খুব প্রয়োজন এবং এসব পর্যায়ের ভিতর দিয়ে তারা প্রকৃত মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠে। আসলে পৃথকভাবে বেড়ে উঠার মূল কারন হল পিতামাতার কাছ থেকে পাওয়া জিনগত গুন,পরিবেশের ভিন্নতা, যে পরিবেশে বড় হচ্ছে তার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া,পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্ক ,দেহগত বিকাশের হার।

কিশোরদের দৈহিক বিকাশ ছোটবেলা থেকে ভাল হলে বড় হতে হতে পরিবেশের সাথে মানিয়ে জায়। অপরদিকে কিশোরীদের দৈহিক বিকাশের কারণে অনেক হয়রানির শিকার হতে হয়। তাদের সারাদিন জীবন এইসব হয়রানির খারাপ অভিজ্ঞতা বয়ে বেড়াতে হয়।

এসময় বাবা-মায়ের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হতে দেখা জায়। এর মূল কারন হল-

  • পড়াশোনার প্রতি অনিহা
  • বাইরে বেশি ঘুরাঘুরি করা
  • বন্ধুদের সাথে অতিরিক্ত আড্ডা দেয়া
  • নেশা করা
  • প্রেম করা
  • ব্যক্তিগত খরচের আকাঙ্খা
  • ধর্ম পালনে অনীহা

কৈশোরে সমস্যা গুলো সমাধান করা না হলে  বড় হয়ে সম্পর্ক আরও খারাপ আকার ধারণ করতে পারে। রাগ,অভিমান,খুব,হতাশা বাড়তে পারে।বাবা-মায়ের সাথে সম্পর্ক ভালো থাকলে তারা স্বস্তি বোধ করে। হতাশা কেটে যায়।

বাবামায়ের করণীয়ঃ

  • ধৈর্য ধরে সন্তানের কথা শুনতে হবে।
  • ওর প্রতি আগ্রহ আছে বিশ্বাস করাতে হবে।
  • বন্ধুদের সম্পর্কে যে কথা বলছে পছন্দ না হলেও বুঝতে দেয়া যাবেনা
  • সমাজে তার কর্তব্য বুঝাতে হবে, দায়িত্বশীল করে তুলতে হবে।
  • নিজস্ব মূল্যবোধ গড়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করতে হবে।
  • জীবনের লক্ষ্য কি হওয়া উচিৎ সে ব্যাপারে জানাতে হবে।
  • সন্তানের বন্ধু হতে হবে যাতে সবকিছু শেয়ার করতে পারে।
  • স্বাধীনভাবে চিন্তা করার ক্ষমতা বাড়াতে হবে।
  • ভালো খারাপের পার্থক্য শিখাতে হবে।
  • যে প্রত্যাখান করেছে তার সঙ্গে বা অন্য বন্ধু ও বয়স্কদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলা যাবেনা।
  • খোলাখুলি আলোচনা করা
  • জীবন যাত্রায় কৌতুক ও রসবোধ জাগাতে হবে।
  • জীবনের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব রাখতে হবে।
  • শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে হবে।
  • অতিরিক্ত সমালোচনা করা যাবেনা।
  • অন্ধের মতো অনুকরণ বন্ধ করতে হবে।
  • বয়স উপযোগী  বিভিন্ন কাজে তাদের নিয়োজিত রাখা।
  • যথাপযুক্ত  পুরস্কার ও প্রশংসার মধ্যে কিশোরদের উৎসাহিত করা।

এ বয়সের সুস্বাস্থ্য পরবর্তী জীবনে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে রক্ষা করে। তাই সন্তানের প্রয়োজনীয় পুষ্টির ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। কৈশোর বয়সে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে ওজন কম বা বেশি হতে পারে। তাই কিশোর–কিশোরীদের পুষ্টি ঠিকমতো হচ্ছে কি না, তা জানার জন্য মাঝেমধ্যে তাদের ওজন–উচ্চতা মাপতে হবে এবং খাদ্য তালিকায় প্রোটিন, চর্বি, শর্করা, ভিটামিন, খনিজ লবণ ও পানি অবশ্যই থাকতে হবে।

লেখা: Shaila Nazneen

What’s your Reaction?
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0

Leave a Reply