Nothing can harm you as much as your own thoughts unguarded.

— Buddha

তড়িতের ব্যঞ্জনা

রোজ একই ট্রেনে যাতায়াত করে ওরা।

ব্যঞ্জনা আগে এলে তড়িতের জন্য জায়গা রাখে। তড়িৎ আগে এলে ব্যঞ্জনার জন্য। বেশ কিছু দিন এভাবেই চলছে। কথাবার্তা তেমন কিছু হয় না। দুজন দু জায়গায় অফিস করে। ফেরার ট্রেনও একই। শুধু নাম পরিচয়টুকু ওরা জানে। কিন্তু দুজনের চোখেমুখেই মুগ্ধতা। তড়িৎ চা খেলে ব্যঞ্জনাকে দেয়। ব্যঞ্জনা লজেন্স কিনলে তড়িৎকে দেয়।

দুজনেই চেয়ে থাকে দুদিকের জানালায়।

একদিন নামার সময় ব্যঞ্জনা তার রুমালটি ফেলে রেখেই চলে গেল। তড়িৎ রুমালটি কুড়িয়ে নিয়ে ছুটল তার পেছন পেছন। কিন্তু ধরতে পারল না। ভিড়ে হারিয়ে গেল ব্যঞ্জনা।

রুমালটি বাড়ি নিয়ে গেল তড়িৎ। তার বাড়ি সুগন্ধীতে ভরে গেল। রুমালটি বিছানায় রাখল, মনে হল ব্যঞ্জনা এসে বসল। রুমালটি মুখের কাছে নিয়ে গেল, মনে হল ব্যঞ্জনা দুইহাতে মুখটা চেপে ধরে চুমু খেল।

তাহলে কি ইচ্ছে করে ফেলে গেছে রুমালটি ? কিন্তু রুমাল দিলে তো প্রেম ভেঙে যায় তড়িৎ বন্ধুদের কাছে শুনেছে ! বড়ো চিন্তায় পড়ল তড়িৎ। রুমালটি মেলে ধরতেই দেখল একটা গোলাপ ফুল আঁকা আছে। তার নীচে লেখা আছে I love you.

তাহলে এই লেখা কেন? ব্যঞ্জনা রুমালটিকে ভালবাসে, না গোলাপটিকে ভালবাসে, না তড়িৎকে ভালবাসে ? কিছুই বুঝে উঠতে পারে না ।

সারারাত ঘুম এল না তড়িতের । সময় না হতেই স্টেশনে এসে উপস্থিত হল। অপেক্ষা করতে লাগল কখন ব্যঞ্জনা আসবে।

মনে মনে ঠিক করল, ব্যঞ্জনাকে ফেরত দেবে রুমালটি। বলবে, কাল ফেলে গেছ ট্রেনে ; এই নাও তোমার রুমাল !

কিন্তু ফেরত দেওয়া কি ঠিক হবে? ব্যঞ্জনা কিছু ভাববে নাতো?

নিজেকে বড়ো অসহায় মনে হল তড়িতের ।

Writer: তৈমুর খান

What’s your Reaction?
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0

Leave a Reply