ইচ্ছাশক্তি (Willpower)

	
	

























































			
			











May all beings have happy minds.

— Buddha

ইচ্ছাশক্তি (Willpower)

মানুষ করতে পারে না এমন কোনো কিছু নেই বলে একটি কথার প্রচলন আছে। গুরুজনেরা বলে সব সময় সময়ই নিজের উপর বিশ্বাস করে সবকিছু করার জন্য এগিয়ে যাও। ইচ্ছাশক্তিই মানুষকে আত্নবিশ্বাসী করে তোলে।
নিজের ক্রিয়া, আবেগ বা আহ্বান নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা, দৃঢ়ভাবে কোনোকিছু করার ইচ্ছাই হলো ইচ্ছাশক্তি। ইচ্ছাশক্তি মানুষকে জীবনে অনেক সাহায্য করে তার অনেক বাস্তব প্রমান আমাদের সমাজের কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তিজনের জীবনের গল্পে দেখা যায়।
উল্লেখযোগ্য কয়েকজন ব্যক্তির গল্প হলোঃ

নেলসন রোলিহ্লাহ্লা ম্যান্ডেলা ১৮ জুলাই ১৯১৮ জন্মগ্রহণ করেন এবং ৫ ডিসেম্বর ২০১৩ মৃত্যুবরন করেন।তিনি বনর্বাদ বিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী, রাজনৈতিক নেতা এবং প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি।
নেলসন ম্যান্ডেলা ব্রিটিশ দক্ষিণ আফ্রিকার এমভেজোর এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সশস্ত্র সংগঠন উমখন্তো উই সিযওয়ের নেতা হিসাবে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ১৯৬২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার তাকে গ্রেপ্তার করে ও অন্তর্ঘাতসহ নানা অপরাধের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। তিনি দীর্ঘ ২৭ বছর কারাগারে কাটান।কারাগারের থেকে মুক্তি লাভের পর তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ সরকারের সঙ্গে বর্ণবাদ নির্মূলের প্রচেষ্টায় তিনি আলোচনায় অংশ নেন। ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে সব বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে ম্যান্ডেলা তার দল এএনসি’র হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন এবং জয়লাভ করে রাষ্ট্রপতি হয়। এর মধ্য দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদের অবসান ঘটে এবং গনতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা হয়।
তার বর্নবাদ দূর করার ইচ্ছে তাকে তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করেছে।
তার একটি উক্তি হলোঃ
“সবসময়ই, কোন কাজ শেষ মা হওয়া পর্যন্ত অসম্ভব বিষয় বলেই মনে হয়- নেলসন ম্যান্ডেলা”

শেখ মুজিবুর রহমান ১৭ই মার্চ ১৯২০ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে মৃত্যুবরন করেন।তিনি একজন অন্যতম রাজনীতিবিদ এবং আমাদের জাতির পিতা। তিনি ভারত বিভাজন,ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা দাবি, ১৯৭০ এর নির্বাচন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে জাতিকে পথ দেখানো, সবাইকে সাহসের সাথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য ভাষনে অনুপ্রাণিত করা, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৯ মাস কারাগারে থাকা, স্বাধীনতার পর জনগনের জন্য কাজ করে যাওয়া এই সব কিছুর কারনে তিনি আজ জাতির কাছে সম্মানিত হয়ে আছেন। তার অবদান সকলে আজীবন মনে রাখবে।

তিনি এইসব কাজ করেছেন তার ইচ্ছার কারনে, জনগনের জন্য তার ভালেবাসার কারনে, মাতৃভূমির জন্য। তার ইচ্ছাশক্তি না থাকলে তিনি এইসকল কাজ করতে পারতেন না। তার ইচ্ছাশক্তিই তার জীবনে আসা সকল বাধাঁ পার করে যেতে তাকে সহায়তা করেছে।
শেখ মুজিবুর রহমানের একটি উক্তি হলোঃ
“আমরা যখন মরতে শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দাবাতে পারবে না”-শেখ মুজিবুর রহমান।

ইংরেজিতে একটি কথা আছে – There is a way if there is a will অর্থাৎ “ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়”। তাই ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বাস্তবে সফল হওয়া অনেক দৃঢ় মনোবলের বিষয়। ইচ্ছাশক্তি মজবুত হলে মানুষ করতে পারে না এমন কোন কাজ নেই।
ইচ্ছাশক্তি বাড়ানোর জন্য একজন মানুষের যা করা উচিত তা হলোঃ
 পুষ্টিকর খাবার খাওয়া ও সঠিক পরিমানে খাওয়া। খাবার ঠিকমত খেলেও মন-মেজাজ ভলো থাকে যা কাজ করার ইচ্ছাশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
 ঠিকমতো ঘুমাতে যাওয়া ও সকালে তাড়াতাড়ি উঠা। পরিমান মতো ঘুম একজন মানুষের জীবনের জন্য ও মস্তিষ্কের চাপ কমানোর জন্য উপকারী। মস্তিষ্কের উপর চাপ না থাকলে একজন মানুষ সতেজ অনুভব করবে যা তার কোনো কিছু করার ইচ্ছাশক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে।
 সকালে উঠে ব্যায়াম করা। কারন একজন মানুষ যখন শারিরীকভাবে সুস্থতা লাভ করবে তখন সে তার কাজ করায় মনোনিবেশ করতে পারবে।
 অনুপ্রাণিত করে এমন কাজ করা। যেমনঃ বই পড়া, বাগান করা, ঘুরতে যাওয়া, গান গাওয়া, জোকস শোনা, বিশেষ ব্যক্তিজনের ভাষন শুনা।
 স্ট্রেস কমানোর জন্য পছন্দের কাজ করার চেষ্টা করতে হবে।
 কাজে বাধাঁ আসলে তা পার করে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আগে থেকেই নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হবে।

ইচ্ছাশক্তি যখন থাকবে তখন জীবনে সফলতা অর্জন করে এগিয়ে গিয়ে জীবনকে সুন্দর করে বাঁচতে কোনো কিছু আর মানুষকে আটকতে পারবে না।

Writer: মারজান আক্তার

What’s your Reaction?
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0

Leave a Reply