অভ্যাস(Habits)


































































			
			











অজ্ঞতার মধ্যে জ্ঞানের বিস্তার যেন অন্ধকারের মধ্যে আলোর প্রবেশ

— ব্রেশি

অভ্যাস(Habits)

অভ্যাস(Habits)
বাবা -মা বা পরিবারের সদস্যদের কাছে শুনতে পাওয়া যায় যে, মানুষ অভ্যাসের দাস।এটি শুনে হয়ত অনেক প্রশ্ন আসে মানুষের মস্তিষ্কের মধ্যে।
“অভ্যাস কি? অভ্যাস বলতে কি বুঝানো হয়ে থাকে? অভ্যাস ভালো-খারাপ কিভাবে বোঝা যায়? ভালো অভ্যাস মানুষের জীবনে কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ? খারাপ অভ্যাস মানুষের জীবনে কেন বাদ দেওয়া উচিত?”
অভ্যাস হলো মানুষের প্রত্যেকদিনের বিভিন্ন কাজ যেগুলো মানুষ পুনরায় বার বার করে থাকে।মানুষ তাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক কাজ করে থাকে। অভ্যাস হলো মানুষের মস্তিষ্কের মধ্যে কাজ করার একপ্রকার নির্দিষ্ট চিন্তাভাবনা যা মানুষ বার বার ব্যবহার করে থাকে তাদের প্রাত্যহিক জীবনে। অভ্যাস হলো মানুষের চিন্তা-ভাবনা ও ইচ্ছা যা তাদের মানিসক এবং শারীরিক আচরনে প্রকাশ পায়। মানুষের আচরণ মানুষের ব্যাক্তিত্বের প্রকাশ ঘটায়।
ভালো অভ্যাস(good habits)
অভ্যাস ভালো-খারাপ দুই প্রকারই হয়ে থাকে। ভালো অভ্যাস হলো প্রীতিকর আচরন বা কাজকর্ম,যেগুলো মানুষের জীবনে মেনে চলতে বলা হয়ে থাকে।ভালো অভ্যাস গঠন করার অনেক উপায় রয়েছে। তাছাড়াও অভ্যাস পরিবারের সদস্যদের অনুকরণ করার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে চলে আসে। ভালো অভ্যাস যেগুলো মানুষের মাঝে ধারন করা উচিত সেগুলো হলোঃ
১.স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণঃ
বর্তমানে মানুষ তেলযুক্ত খাবার,ফাস্ট-ফুড জাতীয় খাবার,মিষ্টি, চকলেট ইত্যাদি খাবার বেশি খেয়ে থাকে।যার ফলে মানুষের অনেক সমস্যা দেখা দিচ্ছে, মানুষ বিভিন্ন রোগে ভুগছে। বর্তমানে শিশুরা শাক-সবজি খাওয়া পছন্দ করে না। কিন্তু শিশু, যুবক,প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তিদের শাক-সবজি, ফল,দুধ ইত্যাদি স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া উচিত। ফল, শাক-সবজি, দুধ ইত্যাদি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার।

২.ব্যায়াম করাঃ
ব্যায়াম করা শরীরের জন্য উপকারী। ব্যায়াম শিশু,যুবক,বৃদ্ধ সকল বয়সের মানুষের জন্য প্রয়োজনীয়।শারীরিক কার্যককলাপ বা ব্যায়াম মানুষের শরীরের অতিরিক্ত মেদ,ক্লান্তি দূর করে। এটি মানুষকে মানসিক ভাবে ফুর্তি দিয়ে থাকে,মানসিক চাপ দূর করে।


৩.পর্যাপ্ত পরিমান ঘুমঃ
ঘুম মানুষের মস্তিষ্কের ও শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হলে তা মানুষের শরীরে প্রভাব ফেলে,মানুষের মস্তিষ্কের উপরও প্রভাব ফেলে ঘুম। কম ঘুম হলে মানুষের অনেক সমস্যা দেখা দেয়। সঠিক সময়ে ঘুমানো এবং সকালে তাড়াতাড়ি উঠার অভ্যাস করা উচিত। এতে সকালে উঠে সতেজ ও সক্রিয় বোধ হয়।


বাচ্চাদের জন্য সঠিক সময়ে ঘুমানোর ও সকালে তাড়াতাড়ি উঠা রুটিন করে তা মেনে চলার অভ্যাস গঠন করলে তা তাদের পরবর্তী জীবনে ভালো প্রভাব ফেলে।


৪.সময়ের মূল্যঃ
সময় আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সময়ের কাজ সময়ে করার অভ্যাস গঠন করা অনেক দরকারি। সময়ের কাজ সময়ে করানোর অভ্যাস যেমনঃ সকালে তাড়াতাড়ি উঠে স্কুলের জন্য রেডি হওয়া, দৈনিক সনয়সূচি অনুসরন করার অভ্যাস শিশুদের ছোটকাল থেকে গঠন করালে তা তাদের পরবর্তী জীবনে তাদের কাজে ভালো ফল আনবে।
৫.সকলের সম্মান করাঃ
পরিবারের বড়দের এবং বাইরেও সবকলের সম্মান করতে শেখানো উচিত শিশুদের। এতে করে তাদের আচার-আচরণে ভদ্রতা দেখা যায় এবং ছোটদের সাহায্য করা, তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করা, স্নেহ করা ইত্যাদি শেখানো উচিত।
৬.পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকাঃ


পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা ইমানের অঙ্গ। পরিষ্কার থাকলে অনেক রোগ-জীবাণুর আক্রমণ থেকে দূরে থাকা যায়।প্রত্যেকদিন গোসল করা,বাইরে থেকে এসে হাত-মুখ ধোয়া, খাবার আগে হাত ধোয়া,হাত ধোয়ার সময় সবান বা হ্যান্ডওয়াসের ব্যাবহার করা, অগোছালো জিনিস গুছিয়ে রাখা ইত্যাদি শিশুদের শেখানো উচিত। এতে এটি তাদের একটি ভালো অভ্যাসে পরিনত হয়।
৭.সকল কাজে অংশগ্রহণঃ
সকল কাজে অংশগ্রহণের ইচ্ছা ও উৎসাহ শিশুদের দেওয়া উচিত। স্কুলের কোনো অনুষ্ঠানে বা পারিবারিক কোনো কাজে অথবা বন্ধুদের সাথে খেলা ইত্যাদি সকলে কিছু করতে শিশুদের উৎসাহিত করা উচিত। এতে করে তারা অন্যান্য কাজ করার বা নতুন কাজ করার সাহস পায়। তারা সকলের সাথে মিশতে ভয় পায় না বা নতুন কোনো কাজ করতে ভ্য় কম পায়।
এগুলো ছাড়াও আরো যে অভ্যাস সবার থাকা উচিত সেগুলো হলোঃ
• নম্র হওয়া।
• কারো হাসি-ঠাট্টা না করা।
• কাজে বা জীবনের সকল ক্ষেত্রে ধৈর্য্-ধারন করা।
• পরিবারের সবার সাথে একসাথে খাবার খাওয়া।
• সহযোগিতা মনোভাবের অধীকারি হওয়া।
• খেলাদুলা করা।
• বই পড়া অবসর সময়ে।
খারাপ অভ্যাস(bad habits):
ভালো অভ্যাস যেমন প্রীতিকর তেমনি খারাপ অভ্যাস হচ্ছে অপ্রীতিকর আচরণ। খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করা উচিত তাই সবার। খারাপ অভ্যাস মানুষের ব্যক্তিত্বের উপর প্রভাব ফেলে। অনেক গুলো খারাপ অভ্যাস যেগুলো মানুষের ত্যাগ করা উচিত সেগুলো হলোঃ
• বেশি খরচ করা।
• বড়দের অসম্মান করা ও সবার সাথে খারাপ ব্যবহার করা।
• নখ কামড়ানো।
• অস্থির হয়ে উঠা।
• পড়া-লেখায় ফাঁকি দেওয়া।

অভ্যাস অনেক গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ভালো অভ্যাস যেমন জীবনে সাহায্য করে জীবন সুন্দর করে তুলবে তেমনি খারাপ অভ্যাস জীবনের অনেক সমস্যা তৈরী করবে যা পরবর্তী সময়ের জন্য হয়ত ক্ষতিকর হবে।তাই সবার উচিত খারাপ অভ্যাসগুলো ত্যাগ করে ভালো অভ্যাস গঠনের জন্য চেষ্টা করা।
“Take action before it’s too late. Your action will decided how your future will be and what will you gain.”

Writer: মারজান আক্তার

What’s your Reaction?
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0

Leave a Reply