ফাল্গুনে শুরু হয় গুনগুনানী, ভোমরাটা গায় গান ঘুম ভাঙানি

— – ফররুখ আহমেদ

মানসিক চাপ থেকে মুক্তির জন্য করনীয় (Things to do to get rid of stress):

মানসিক চাপ অনেক কারনেই সৃষ্টি হয় থাকে আমাদের মাঝে। মানসিক চাপ তখন সৃষ্টি হয় যখন আমরা কোনো কিছু করার প্রত্যাশা করি ও তা যদি ঠিকমতো না হয় তাহলে অথবা কোনো কাজে বাধাপ্রাপ্ত হলে তা থেকে যে উত্তেজনার বা যে অস্থিরতার জন্ম হয় তাকেই মানসিক চাপ বুঝায়। মানসিক চাপ বা স্ট্রেস সব বয়সের মানুষের মাঝেই দেখা যায়। একটি শিশুর মাঝে স্কুল জনিত কারনে মানসিক চাপ দেখা দিতে পারে, একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের মধ্যে কাজের অসফলতা বা কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলেও মানসিক চাপের সৃষ্টি হয়। মানুষের জীবনে সর্বদা অনেক প্রকার ঘটনা ঘটে থাকে যা মানসিক চাপ বা স্ট্রেসের কারন হয়ে থাকে। মানসিক চাপ মানুষের জীবনে অনেক প্রভাব ফেলে, এর ফলে মানুষের আচরনে ও কাজে বিভিন্ন ধরনের ইতিবাচক এবং নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
মানসিক চাপ অনেক কারনে সৃষ্টি হয় যেমন; পরীক্ষায় ভালো ফলাফল না হওয়া, হঠাৎ কোনো প্রিয়জনের মৃত্যু, পরিবারের সদস্যদের সাথে ঝগড়া-বিবাদ, নতুন কোনো জায়গায় গেলে খাপ খাওয়াতে না পারলে , অফিসের কাজে সমস্যা সৃষ্টি হলে ইত্যাদি। কিন্তু অনেক দিন এমনও যায় যখন কোনো মানসিক চাপ থাকে না। তাই মানসিক চাপের সৃষ্টি হলে তা থেকের নিস্তার পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
মানসিক চাপ কমানোর জন্য অনেক ধরনের উপায় আছে। মানসিক চাপের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য যা করনীয় তা হলোঃ
পছন্দের কাজ করাঃ

মানসিক চাপের সমস্যায় ভুগলে নিজের যা করতে ভালো লাগে বা করলে মন ভালো হয় এমন কাজ গুলো করা উচিত। যেমনঃ বই পড়া, মানুষের সহোযোগিতা করা, বাগানে কাজ করা ইত্যাদই। এতে করে মন ভালো হয় ও স্ট্রেস কমে।
সঠিকভাবে খাওয়াঃ

খাওয়ার আমাদের শরীরে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে। মানসিক চাপের ভুগলে তখন খাবারে অনিহা এসে থাকে। তাই এই সময় সঠিকভাবে খেতে হবে তাহলেই শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা যাবে।
পরিমিত পরিমানে ঘুমঃ

মানসিক সমস্যায় ভুগলে তখন আমাদের মস্তিষ্কের উপর অনেক চাপ পড়ে। তাই রাতে নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া ও সকালে নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে উঠা অনেক প্রয়োজনীয়। পরিমিত পরিমানে ঘুম হলে সকালে উঠে সতেজ অনুভব হয়। ঘুম ঠিক মতো হলেই পুরোদিন সুন্দরমতো কাজ করা যায়।
অস্থিরতায় শান্ত থাকার চেষ্টাঃ
মানসিক চাপে থাকলে মানুষের মাঝে অস্থিরতা দেখা যায়। অস্থিরতায় কোনো সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হয়, তাছাড়া অস্থিরতার কারনে কোনো কাজ সঠিকভাবে করতেও সমস্যা হয়। তাই অস্থিরতা মনভাব দেখা দিলে তখন স্থিতিশীল থাকার চেষ্টা করতে হবে। স্থিতিশীল থাকার জন্য আপনার করতে ভালো লাগে এমন কোনো কাজ করা উচিত বা গান শুনেও মন শান্ত করার চেষ্টা করা উচিত।
ধ্যান করা বা ব্যায়াম করাঃ
ব্যায়াম মানুষের শরীরের জন্য যেমন উপকারী তেমনি মস্তিষ্কের জন্যও উপকারী। ধ্যান মানুষের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে ও আত্নবিশ্বাসী হতে সাহায্য করে। ব্যায়াম করলে মানুষ সতেজ অনুভব করে ও মানুষের মানসিক কমাতেও সাহায্য করে। এটি মানসিক চাপ তৈরিকারি হরমোন নিসঃরনে সহায়তা করে।
দৈনন্দিন কাজের রুটিনঃ
প্রত্যেকদিন মানুষ অনেক ধরনের কাজ করে থাকে। ডেইলি রুটিন অনুযায়ী কাজ করলে মানুষের জীবনে একটি শৃঙ্খলা থাকে। সবকিছু গুছিয়ে করার একটি সুন্দর অভ্যাস তৈরি হয়। গুছিয়ে চললে এটি একজন মানুষের অনেক কাজের সময়ও বাছিয়ে দেয় যার ফলে মানুষ কাজ শেষ করে নিজের জন্যও একটু সময় বের করতে পারে। প্রত্যেকদিনের ব্যস্ত জীবনে নিজের জন্য একটু সময় বের করলে তা মানুষের জীবনে চলমান মানসিক চাপ নিসঃরনেও অনেক সাহায্য করে।
আপনজনদের সঙ্গে সময় কাটানোঃ
পরিবার, বন্ধু-বান্ধব হলো মানুষের সবচেয়ে কাছের মানুষ। পরিবারের সাথে সময় কাটালে মানুষ তার পুরো দিনের ভালো-খারাপ সবই নিয়ে আলোচনা করে। এরফলে মানুষের মনে যে খারাপ অনুভূতি থাকে সেগুলো দূর হয়ে যায়। বন্ধু-বান্ধবের সাথে কথা বলেও মন হালকা হয় খারাপ সময়ে । তাই মানসিক চাপের থেকে মুক্তির জন্য পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবের ভূমিকা অনেক।

মানসিক চাপ জীবনে অনেক প্রভাব ফেলে কারন এটির ফলে মানুষকে অনেক বাধা পেরিয়ে আসতে হয়। যা মানুষকে মানসিক দিক দিয়ে অনেক মজবুত করে তুলে, কঠিন সময়ে স্থিতিশীল থাকতে শেখায় মানসিক চাপ। জীবনে অনেক অভিজ্ঞতা তৈরি হয় ও অনেক মানুষকে তাদের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে সাহা্য্য করে। সব কিছুরই ভালো-খারাপ দুই দিকই আছে এটি মাথায় রেখে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

Writer: মারজান আক্তার

What’s your Reaction?
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0

Leave a Reply