Tag: প্রেমের কবিতা

  • অপরাধী অপরিচিতা

    অপরাধী অপরিচিতা

    অপরাধী অপরিচিতা

    আমিও রাতের আকাশ দেখি,
    আকাশের তারা গুনি,
    তারাদের খশে পড়া দেখে
    নিজের ইচ্ছের কথা বলি।
    আমার গল্প বলা চাঁদের সাথে
    তোমারও কি কথা হয়।
    তুমিও কি হারাও সেই পথে
    যে পথ কখনো এক হয়ে দুই প্রান্তে মিলিত হয়!!!
    আমি জেগে থাকি সেই রাতে
    যে রাতে চন্দ্রিমা সূর্যকে গ্রহণ লাগাই।
    যেন মিলনের পথে এক হয়েও
    মনের দেয়াল দূরে সরায়।
    সেই আদুরে দিন কি তোমায় ভাবাই??
    প্রথম দেখায় যার চোখ ভালোবাসার সমুদ্র ভাসাই!!
    যার ঢেউয়ের আঘাতে
    দূরত্ব কমে
    একে অপরের বুক জড়ায়!!!
    থেমে যেত যদি সময়।।
    সীমান্ত পেরিয়ে সেই শহরে,
    যেখানে শঙ্খ মালা তোমার লজ্জা কাটায়!!
    চোখের মণি করে একপাশ,
    কোনো এক অনুভুতির ভেলায়
    মনে কি পড়ে??
    তোমাকে ভালোবেসে একজনের
    জায়গা,জীবন
    কে দায়িত্বশীল বানাই!!
    আমার যেন মুহুর্ত মুহুর্ত কাদায়!!!
    লাল সাড়ি,লাল টিপের বেসে
    হবে মোহনীয় কোনো কারুকার্য
    বৈশাখ এর অপেক্ষায়…
    আমার খোলা চুলে
    আলতো করে ছুয়ে দিবো তোমায়
    ইচ্ছে আঁচলে বেধে রাখবো তোমায়…
    তা কি সীমিত ছিল শুধু আমার ভাবনা??
    যেমন বিন্দু বিন্দু জমে
    আকাশ হতে শিরশিরে ঝরে
    সময়ের পাতা যেন অচেনা করে আমায়…
    শূন্যতার মাঝেও কাছে থাকার অনুভূতি বাড়ায়…
    শেষ বিদায়ে ঘণ্টা বাজে
    মায়াবতী সে
    তোমার দিকে তাকায়
    যাওয়ার আগে কি বুকে জড়াবে নাকো আমায়??
    যেন মনভরা অভিমান
    এই বুঝি শেষ দেখছি তোমায়!!!??
    অমঙ্গলা….
    গোলাপের সৌন্দর্য সেই যেন দাড়ি চিহ্ন বসায়…!!!!
    অবশেষে আসে শূন্যতা, বিষণ্নতা
    জীবনের মানে যেন তারাই নতুন করে শিখায়
    ভাগিদার তারা কি
    তোমাকে ও বানায়???
    চুপ,চুপ
    তোমার কথা মান্য না,,
    সমাজের লঙ্ঘিতা বাড়ায়।।
    তালাবদ্ধ বাক্সে
    মুড়িয়ে দিয়েছি
    হয়তো মরিচার রঙে তারাও রঙিন,,,
    যেমন সাদা প্রাসাদ
    মমতাজের দুঃখ লুকায়!!!
    তুমিও কি সেই ঠিকানার পথচারী
    যার পথচলা
    যেন বাচতে হবে তাই বেচে থাকা???
    যদি দিন হতো
    তারাদেরও লুকিয়ে নিয়ে আসতাম
    সূর্যের মতো করে তোমায় রাঙিয়ে দিতাম।।
    মুসাফির হয়ে দুটানায়
    ডাঙার নৌকেও যেন সুতায় আর না আটকায়
    জবাব আসে না।
    রাত যেন শতক শতক জায়গায়
    তুমির জীবনটা কেমন এখন???
    এই শহরে এক অপরিচিতা
    যার সীমান্ত তোমার সীমিত সীমানায়!!!!!

    Writer: Sahnaj Rahman

  • জাদুকরী বিরহ

    #কাব্যগ্রন্থ_অবান্তর_নীলা #শাওন_মল্লিক

    কি আশ্চর্য জাদুকরী বিরহ তোমার
    ধমনী থেকে গলগল করে রক্ত বেরুচ্ছে
    বিরহ বেরুচ্ছে না কেনো….?
    রক্তেমাখা হাত দিয়ে বিরহ বেরুচ্ছে না কেনো?
    তোমার কবির রক্তের রিরহে আজ কাব্য রক্তাক্ত…
    তবুও সাহিত্য বেরুচ্ছে না কেনো?
    মেঘ মৃত্যুর পথে তবুও নীলার আবছায়া বেরুচ্ছে না কেনো?
    কষ্টের আঘাত চলছে তো চলছেই
    জাদুকরী বিরহের ভুরুর ইশারায়….
    নীল আকাশের নীল মেঘ আজ গাড় কালোজামা….
    বিদ্যুৎ চমকেই ঝড়ছে বৃষ্টি….
    কি আশ্চর্য….
    তবুও বিরহ ঝড়ছে না কেনো?
    নীলা!
    কি আশ্চর্য জাদুকরী বিরহ তোমার
    ধমনী থেকে গলগল করে রক্ত বেরুচ্ছে
    বিরহ বেরুচ্ছে না কেনো….?

  • অসম প্রেম

    অসম প্রেম

    নূরজাহান তাবাসসুম দিয়া

    অন্যমনষ্কতার মুচকি হাসির কারন হবে?
    কথা দিচ্ছি,খুব যত্ন করে হাসব!
    শুকনো মরুভুমিসম হৃদয়ের
    শীতল ঝর্না হয়েই দেখ একবার?
    কথা দিলাম, ভীষন ভালোবাসবো!

    ফাটল ধরা হৃদয়
    খুব সুন্দর করে সারিয়ে তুলতে জানি আমি!
    আমার কাছে ভালোবাসা নামের
    এক মহৌষধ আছে!
    আমি খুব সাবধানে তুলে রেখেছি কাঁচের বাক্সে,
    আমার পাঁচটি নীলপদ্মের সাথে,
    একবার ফিরে এসেই দেখ,
    কি আয়োজন সাজানো আছে
    আমার কাছে, তোমার জন্য!

    হৃদয়ের খুব গভীরে নাকি সবার একটা করে
    গোপন কুঠুরি থাকে
    কুঠুরি নয়, সে তো একটা বিশাল রাজ্য
    যেখানে সর্বসাধারণ এর প্রবেশ নিষেধ!
    অথচ আমার অনুমতি না নিয়েই, সেখানে তুমি
    রাজার হালে, বাসর সাজিয়ে দিব্যি বসে আছো!
    সে কথা তো কেউই জানলো না!
    কার সাধ্যি তোমাকে সরায়?

  • নষ্ট

    আমি নষ্ট!
    ধোয়াশার প্রেমে আমার নিবাস,
    অন্ধ প্রদেশে তাই শ্রেষ্ঠ।

    আমি ভালোবাসার বিনাশে অভিযুক্ত,
    দুর্বোধ্য হাসিতে মত্ত;
    অন্ধকূপের লালসায় জড়িত,
    শিহরনের জয়ে আমি উল্লসিত।

    আমি রক্তমাখা তরবারি নিয়ে হাটা পথিক,
    আমি প্রতিশোধের আগুনে জ্বলে পোড়া ছাই।
    মানবের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি আমার নিকট,
    ক্ষিপ্ত ধনুক ছোড়ার আগে আমি চলে যাই।

    আমি অধিকতর নষ্ট!
    আমি জানিনা ঘটেছে কার মৃত্যু!
    নষ্ট- আত্না নাকি গাত্র?

    মোঃ ফারিয়াদ তামিম জিসান

  • সেই নীলাঞ্জনা

    আমার বন্ধু নীলাঞ্জনা
    তার কাছে যেদিন,
    প্রথম প্রেমের প্রস্তাব নিয়ে
    সামনে দাড়িয়ে ছিলাম
    সে প্রস্তাবে রাজি হয়নি!
    তার বুকের পাজরে একটু খানি ঠাই চেয়েছিলাম,
    সে জায়গা করে দেইনি
    জানি তার ভিতর জায়গা
    অন্য কেউ হতে দেয়নি।
    তারপরেও তার ভেতরের
    বাক ভঙ্গিটা ছিল আমার,
    সুদুর প্রান্তরে পথচেয়ে
    বসে থেকেছি রাত জেগে।
    ঘুমের ঔষুধে নেশায় কেটেছে কয়েকটি দিন,
    তবুও সাড়া পাইনি
    সেই নীলাঞ্জনার~

    মোস্তাক আহম্মেদ সাগর

  • শুনিতে পাই

    আমি বৃক্ষের কথা শুনিতে পাই
    যখন পূবালী বাতাস বয়,
    আমি বৃক্ষের কান্না শুনি
    যখন পাতা ঝড়ে যায়।

    আমি পাখির আনন্দ অনুভব করি
    যখন কিচির মিচির শব্দ করে,
    আমি পাখির আর্তনাদ শুনি
    যখন বৃক্ষের অভাবে অক্সিজেন কমতে থাকে।

    আমি খেক শিয়ালের বিয়ের খবর পাই
    যখন রৌদ্র ভরা দুপুরে বৃষ্টি নামে,
    আমি খেক শিয়ালের চিৎকার শুনি
    যখন শীতে কুঁয়াশায় চারদিক ঢেকে যায়।

    আমি সমুদ্রের হাঁসি দেখতে পাই
    যখন সমুদ্রে ঢেউ উঠে,
    আমি সমুদ্রের কান্নার আওয়াজ শুনি
    যখন সমুদ্রে বর্জ্য পদার্থ আঘাত হানে।

    লেখা: মোস্তাক আহম্মেদ সাগর

  • তোমার কন্ঠ

    ঈশানি,তোমার কন্ঠ যেন কোকিলের কলরব,
    ক্যাম্পাসে শুনিয়ে ছিলে
    রৌদ্র ভরা ক্লান্ত দুপুরে।
    আসবে কি আবার ফিরে?
    সেই কন্ঠে মুগ্ধ করিতে
    কোনো এক সময়ে।
    তোমার কন্ঠে মুখোরিত হয়ে যায়!
    আমার সকল হৃদস্পন্দন,
    তোমার কন্ঠে বেজে উঠে
    এখনো আমার সেই টেলিফোন।
    আসবে কি আবার ফিরে?
    সেই মায়া ভরা কন্ঠ নিয়ে,
    ভোর প্রভাতে কোকিল বেশে হয়তো বা বৃষ্টি হয়ে।
    এখনো ইচ্ছে করে শিশির বেশে
    তোমার কন্ঠে মিশে যেতে,
    আসবে কি আবার ফিরে
    ঈশানি তোমার মায়াভরা কন্ঠ নিয়ে।

    লেখা: মোস্তাক আহম্মেদ সাগর

  • অসাধারণ

    অসাধারণকে কখনও চোখে দেখিনি , আজ খুব কাছে থেকে দেখলাম ওকে । ওর পেছন পেছন অনেকদূর হেঁটে এলাম, তারপর অসাধারণ একটা ট্যাক্সি চেপে অদৃশ্য হয়ে গেল। কী মিষ্টি গন্ধ, কী শ্যাম্পু করা চুল, চুলের ঢেউ, কী ছন্দোময় হাঁটা  !   দেখতে দেখতে শুঁকতে শুঁকতে আমি আর আমি ছিলাম না  । আমি কী যেন হয়ে গেছিলাম । 

          অত সুন্দর নাক , অমন কাজল-ভোমর চোখ , ধনুক-বাঁকা চোখের ভ্রু , লাল ঠোঁট, ঠোঁটে লেগে থাকা কী মিষ্টি হাসি, আহা এমনটি আর কখনও দেখিনি ! 

           মাজা দুলে দুলে হাঁটা, চিকন নাভির নিচে গভীর ঊরু-সন্ধি , ব্লাউজের ফাঁকে পিছল মৎস্যপিঠ , সুললিত হাতে নির্ভার দুটি শাঁখা, কপালরাঙা ঝিলিক মারা সিঁদুর , দেখতে দেখতে আমি চোখের পাতাও ফেলতে ভুলে যাচ্ছিলাম। 

             সুখের বিন্দু বিন্দু ঘামগুলি মণিমুক্তার মতো জ্বল জ্বল করছিল খুব । বারবার মুছে নিচ্ছিল একটা রক্তগোলাপ রুমাল। বুকের মগ্ন গোলাপ দুটি ছটফট করছিল কাপড়ের অন্তরালে । আহা কী পবিত্র , আহা কী সাহসী , আহা কী উন্নত , আহা কী তীব্র তারা  ! 

                একটা ছোট্ট শিশি বের করে ছুটছিলাম একশিশি ঘাম নেবো বলে। একটা ছোট্ট রুমাল বের করে দেখাচ্ছিলাম গোলাপী ঠোঁটের থুথুতে ভিজিয়ে নেবো বলে। হাঁটার ছন্দ শিখে নেবো বলে পেছনে পেছনে ছুটছিলাম। 

    ২.

    এই ছোট্ট শহরে এমনই এক অসাধারণের সঙ্গে দেখা হল। স্বপ্নমাত্র। তারপর আমি পাগল হয়ে যেতে লাগলাম। আমার আর কোনও স্মৃতিশক্তি রইল না। এখন যেকোনও মহিলাই আমার কাছে অসাধারণ হয়ে গেল। অবাক হয়ে দেখতে লাগলাম তাদের। ছোট্ট শিশি ভরে নেবার জন্য , ছোট্ট রুমালটি ভিজিয়ে নেবার জন্য পেছন পেছন ফিরতে লাগলাম। এক ক্ষণিকের এক অসাধারণ অনন্ত সময়ের অনন্ত অসাধারণ হয়ে উঠল । আমি বাতাসে মিষ্টি গন্ধ পেতে লাগলাম। আমি মাজার দুলুনি দেখে দেখে ছন্দ শিখতে লাগলাম। গাছে গাছে ফুল ফুটলে সকল ফুলকেই মগ্ন গোলাপ মনে হল। আমি তাদের সাহস ও সৌন্দর্যে পুনরায় বিমুগ্ধ হতে থাকলাম। 

    ৩.

    অভাবের পৃথিবীতে এত দুঃখ নিয়ে জন্মেছিলাম , কিন্তু দুঃখকে কখনও ভালোবাসতে শিখিনি।  এত অভাব ছিল , তবু অভাবকে সুন্দর করে তুলতে পারিনি। এক অসাধারণ সব , সব শিখিয়ে গেল । এখন দুঃখ যন্ত্রণা অভাব আমার বন্ধু। তারা আমার সঙ্গে থাকে আর অসাধারণের চলে যাওয়া উপভোগ করে  । শিশির মাখা পদ্মফুলের মতো আমি ফুটে উঠি মানস সরোবরে। কেউ কি আমাকে চেনে  ? 

    ৪.

      ছোট্ট শহর ।  রোজ ধানসিঁড়ি নদীটি বাসে উঠে চলে যায় । বনলতা বাস থেকে নামে। রোজ রাতে চুমু খেতে আসে অরুণা। আহা বিকেল‌-রাঙা শাড়িতে তার কী মুগ্ধতা না ঝরে  !  চারপাশে কত খঞ্জনা পাখি নেচে যায়  । অনবরত নাচে । বসন্তের জলে কোনও কোনও মৎস্য ঘাইমারে  । আহা কী আনন্দ , আকাশে বাতাসে রবীন্দ্রনাথ  ! 

    ৫.

    চেয়ে চেয়ে দেখি হাঁকডাকের ভেতরও কী সুন্দর নির্জন পড়া করে তার গভীর পাঠশালায়।   ছবি আঁকে। ভূগোল ও নৃতত্ত্বের ক্লাসে আমিও কোন্ আদিযুগ থেকে সত্যের নির্ণয় যন্ত্র ধরে থাকি । দিকচিহ্ন , ইতিহাস অথবা দর্পণ মায়ার আড়ালে ঢেউ খেলা করে । কুরুক্ষেত্রের মাঠ অথবা শ্রীলঙ্কায় রাম-রাবণের যুদ্ধক্ষেত্রের পাশ কাটিয়ে হেঁটে আসছে অসাধারণ ।  এখনও অতীতচারী চোখে দেখতে পাই তার ঘোড়া । ঘোড়ার খুরের শব্দ শুনতে পাই মেঘে মেঘে বাজে । 

    ৬.

    আমাদের যুদ্ধক্ষেত্র , আমাদের হাটবাজার , আমাদের পশ্চিমের রাস্তায় , আমাদের অন্ধকার গলির মোড়ে আজও কত কত অসাধারণ বিকিনি পরে দাঁড়ায় । মেঘলাদুয়ার খুলে বজ্র-বিদ্যুৎ চমকায় । জয়দেব দ্যাখো , কালিদাস দ্যাখো, বিদ্যাপতি, তুমিও দ্যাখো , বারান্দায় দাঁড়াও, কী সুন্দর অসাধারণ যায় । যেতে যেতে পেছন ফেরে । কী ছুঁড়ে দ্যায় ? কী ছুঁড়ে দ্যায় ? 

     ৭.

    অসাধারণ , আমাকে কবিতা লিখিয়ে করে দিলে ? আরও তো কত লোক শিল্পী হয়ে গেল , আরও কত লোক সানাই-সরোদ-বাঁশিতে বিসমিল্লায়, তবলা-লহড়ায়…….। অথবা কারও কোনও চিৎকার হল না । চিকিৎসাও হল না। এই রোদ্দুরের হাসপাতালে জীবন কাটাল। ছোট্ট শিশিটি কি এখনও ওঁদের হারিয়ে যায়নি ?  ছোট্ট রুমালটি এখনও হাতে আছে  ? 

    ৮.

    কীরকম বোকা বোকা জীবন । কীরকম সস্তা সস্তা মেধা।কীরকম নরমনরম আত্মমর্যাদা । এসব নিয়েই চলে যাই। যেতে যেতে আজ শহর পরিক্রমা। যেতে যেতে সেই ট্যাক্সির খোঁজে ফেরা। যেতে যেতে পথ ভুল। বেঁচে থাকার প্রগাঢ় ইচ্ছায় আবার নিজেই কেমন নিজের শিষ্য। অসাধারণ, এসব তুমিই বোঝো।

    লেখক: তৈমুর খান