ঘাতক
হিংস্রতাগুলি এখনো রূপক হয়েমাঠে নামে রোজরূপকথা ভেবে ওদের ডেকে আনি ঘরেবন্ধুত্ব হয়কখনো কখনো ঠোঁট ছুঁয়ে ফেলিঅথবা দুই হাত নিমগ্ন আলোর মতো ওদের রোশনাইবারান্দায় ছড়িয়ে পড়লেনিজেকে অপার্থিব মনে হয় ভ্রান্তির পথে বাসনাদের গূঢ় যাতায়াতকখনো কখনো ছায়ায় মায়াসাপ ঘোরেবিশ্বাস ভঙ্গ হয় আলোও যখন তরবারিঘাতকেরা বেরিয়ে আসে সব সর্বনামেবিশেষ্য তখন একাই দাঁড়ায়সিজারও খুন হয় ব্রুটাসের কাছে…. তৈমুর খান
ঝড়
হাওয়ার আসার কথা ছিলকিন্তু ঝড় এলোছোট্ট প্রদীপটি নিভে গেলেসব অন্ধকার যদিও এখন অন্ধ চোখকিছুই দেখি না বলেনিজেকেও অচেনা মনে হয় শুধু স্পর্শে ও গর্জনে তফাত বুঝিহাওয়া শান্ত নিরিবিলিঝড় শুধু চোখ রাঙায়। তৈমুর খান
ছোবল
কতযে ছোবল আসে!ছোবলে ছোবলে ক্ষত গণনার নয়তবু কোনো কোনো বৃষ্টির রাতেক্ষত ধুয়ে ফেলিশুধু দাগ থেকে যায়দাগে দাগে বেদনাপ্রহর ওহে আমার ধূসর নম্র বধূ,আলো জ্বালিয়ো না আরথাকুক আঁধারে সব অস্পষ্ট যাতনাচন্দ্রাহত একাকী বিষণ্ণ প্রহরগুলিনিরুচ্চার শব্দে শব্দে লিখি; শব্দেরা এসে ভিক্ষা চায় এই ক্ষয় আয়ু, চাপা দীর্ঘশ্বাসনির্বাক স্তব্ধতায় ভাঙা চুরমারআত্মক্ষরণের বিপন্ন বিস্ময়ভিক্ষা দিতে দিতে কেবলই ফতুর হইজীবনের […]
নিরুত্তর
মন শুধু পুড়তেই জানেচোখের জলে চাঁদ ভাসিয়ে দিইনিজেকে বসাই সহানুভূতির ঘরে অরণ্যের পর অরণ্য জুড়েকত বাঘ সিংহ যায়বাঘ সিংহরা অবিশ্বাস —অবিশ্বাসদের রাখব কোথায়? নষ্ট হতে হতে কষ্টের বারান্দায়আজও কে ডাকতে আসে?কে? সমস্ত জীবনভর নিরুত্তর স্তব্ধতায়ডাক বেজে ওঠে… তৈমুর খান
আজ ভ্রমণ শেষ হল
রাতের শেষ তারাটির মতো জেগে আছআমার ভ্রমণ শেষ হল—নিপীড়িত পৃথিবীর পাদপীঠেবড়ো একা মনে হল আজআরক্তিম যন্ত্রণায়ঘিরে আছে রাতের সমাজ! হাতের আঙুলগুলি গুনে গুনে দেখিঠিকঠাক আছে সব —নখের চিহ্নে এখনো গোলাপি দাগবসন্তরশ্মির স্বরলিপি —তুমি এসেছিলে নিশিপদ্ম বনেহৃদয় পেয়েছে ধূম তাই জাগরণে। আজ ভ্রমণ শেষ হলভোরের প্রলাপ নিয়েহেসে উঠুক সূর্য —আমি ইতিহাসে ঢুকে যাওয়া যুগ…. তৈমুর খান
সম্পর্ক
যাকে মনে রেখে রেখে ফুল ফোটাইআমার বাঁচার বৃক্ষে আবার নতুন পাতা আসেযাকে মনে রেখে রেখে আন্দোলিত শাখা-প্রশাখায়এখনও বিলম্ব বসন্ত এসে হাসে সে কি আমার স্মৃতির পথে আসে?নিভৃত মুহূর্তগুলি যার স্পর্শে রঙিনরঙিন চপ্পল তার এইখানে থেমে যায় এসে! বরষার মেঘেরা সরে যায় একে একেজল দিতে দিতে তাদের কলস শূন্য হয়পাখিরা ডেকে ডেকে কত ডাক রেখে যায়শূন্য […]
সাঁতার
রোজ সাঁতার দিতে দিতে ওপারের তীরের দিকে যাইএই জলরাশি, এই ঢেউ কৌশল শেখায় রোজভাসমান হয়ে থাকা এজীবন শুধুই স্মৃতির কাহিনিকিছুটা যদিও ভুলে যাই, কিছুটা তবুও মনে রাখি ওপারে কি সুখ আছে?এপারের বিষণ্ণতা এসে আমাকে শুধায়নির্বাক তবুও আমি বিস্ময় চিহ্নের মতো সচকিত হই সাঁতার দিতে দিতে নির্ঘাত সাঁতারুডুব মারি, ভেসে উঠি, ক্লান্ত করে জলের উল্লাস তৈমুর […]
গণপিটুনি
আমার সমস্ত বোধ গণপিটুনির দিকে চলে যাচ্ছেহে রাষ্ট্র, কী করে ফেরাব তাকে ? রোজ সে মারা যায়রোজ তার প্রাণ ভিক্ষা চাইজনরোষ বাড়তে থাকে রোজকী করে বাঁচাব তাকে ? রাষ্ট্র কি ধর্মরাষ্ট্র হবে ?বজ্রের কৌশলে আলোড়িত মেঘনীল হৃদয় ঢেকে ভয় নামায় আকাশকরুণার নক্ষত্র নেই, মানবতন্ত্রের মৃত্যু ঘটে বোধের হাহাকার শুনি আস্ফালনের ঘেরাটোপে তৈমুর খান
রুমাল
তোমার রুমালটিতে একবার মুখমণ্ডল মুছে নিয়েছিজটিল সময়গুলি পার হতে হতেএটুকু সারল্য শুধু আজস্বীকারোক্তি হয়ে আছে রাস্তার মোড়ে মোড়ে যুদ্ধের মহড়াতোমার সঙ্গেই মনে মনেবিবাহ সেরে নিয়েযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হওয়া কত বিদ্বেষ বিদ্বেষী আলো মেখে এসে দাঁড়িয়েছেতাদের চকচকে আঁশউদ্ধত ছোবলের মুখপূর্ণ হয়ে গেছে বিষে পিছিয়ে এসেছি তোমার পুবের জানালার কাছেচেয়ে দেখেছি তোমার সংসারে কত গান বাজেসেসব উজ্জ্বল […]
অব্যর্থ মোরগ
এই ভোরের আলোয় আমার ভেতর থেকে ডেকে ওঠে অব্যর্থ মোরগ ক্লান্তিহীন নিরলস বাঁচার প্রজ্ঞাপন — এই তার সফল ঘোষণা ! যদিও কোলাহল রক্তে ভেসে যায় যদিও আকাশে নাচে পাতকীর চোখ নিস্তব্ধ ভ্রুর ভ্রমে কাঁপে পল্লব মেহগনির ডালে ছায়ার সংকোচ তবে কোন্ দিশা এই ডাকে ? পাথরের ঊরু বেয়ে নেমে আসে স্রোত উজানের বিস্ময় মাখে কামনার […]