When you reach the end of your rope, tie a knot in it and hang on

— Franklin D. Roosevelt

মায়ার বাঁধন

পর্বঃ২

লেখিকাঃJamila Akter Sompa

আংকেল যাওয়ার পর আমি চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে আছি।জিয়ান বললো আপনার অভদ্রোচিত মানুষের সাথে বসে থাকতে প্রবলেম হচ্ছেনা।আমি কিছুক্ষণ আগের বিহেভিয়ার এর জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। প্লিজ আমাকে মাফ করে দিয়েন, আর আংকেল কে কিছু বলিয়েন না।

এতো সহজেই তো মাফ করা যাবে না আপনাকে। কিন্তু কেন?আমি তো জাস্ট আপনাকে অভদ্র বলেছি কি এমন করেছি?ফাইন আপনি কিছুই করেননি তাহলে মাফ টা চাইছেন কিসের জন্য জানতে পারি? আমি চায়না তাই কেও আমার জন্য ডিলটা কানসেল করুক।তাতো করিনি। সেই জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

আংকেল আসলো আর বললো চলো লান্চ টা শুরু করি,লান্চ শেষ করার পর সবার গন্তব্য মতো চলে আসলাম।
আমি বাসায় এসে দরজায় বেল বাজাতে যাব তার আগেই মা দরজাটা খুলে দিলো।তুমি কিভাবে বুঝলে আমি চলে এসেছি, বুঝেছি যেইভাবে হোক এখন ভিতরে এসে আমাকে উদ্ধার করো।কি হয়সে তোমার মেজাজ এতো খিটখিটে কেন? আর তুমি কিন্তু দিন দিন খিটখিটে হয়ে যাচ্ছো। তা হবো কেন বাড়িতে দুইটা এতো বড়ো মেয়ে কিন্তু আজ পর্যন্ত বিয়ে দিতে পারলাম না। মা তুমি আবার শুরু করলে স্মৃতি কোথায়? স্মৃতি আমার ছোট বোন। তার বাড়িতে আসার নাম আছে কি এখন পর্যন্ত বাসায় আসে নি।বাবা কি করছে? তার যেটা কাজ শুয়ে আছে।আমি যখন অনার্স ফাস্ট ইয়াররে পড়ি তখন আমার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন।বাবা আর কোনো কাজ করতে পারেনা।তখন থেকে মার কাধে সব দায়িত্ব। আমাদের পড়াশুনা সংসার সামলানো মা করেন।তাই মায়ের মেজাজটা একটু খিটখিটে হয়ে গেছে তার ওপর আবার স্মৃতি বাসায় ফিরে নি আর ও রেগে আছে।

মা তোমাকে বিয়ে নিয়ে ভাবতে হবে না, আমি এখন কোনো ভাবেই বিয়ে করতে পারবোনা।স্মৃতি ইন্টার ফাইনাল ইয়ারের পরিক্ষাটা আগে শেষ করুক।এই মেয়ে এখন ও কেনো বাসায় ফিরলোনা ৪টা বাজতে চললো।চলে আসবে এতো চিন্তা করছো কেন? মায়ের চিন্তা বুঝবি না তোরা যেদিন মা হবি সেদিন বুঝবি আমি শুধু শুধু চিন্তা করি না।

আপু বলে পিছন দিক থেকে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
কি ব্যাপার আজকে মনে হচ্ছে তাড়াতাড়ি চলে এসেছো।হুম আজ তোর এতো লেট কেন? আমাদের কয়দিন পর এক্সাম তাই বান্ধবীরা মিলে একটু আড্ডা দিচ্ছিলাম।

মা তো রেগে ফায়ার পড়াশুনা বাদ দিয়ে ওনি আড্ডা দিচ্ছেন।মা তুমি রাগ করছো কেন? আমার সুইট মা রাগ করেনা, আর কখনো লেট করবো না, তুমি রেগে থাকলে কিন্তু আমি কিছু খাব না বলে দিলাম।দেখছিস। নিজে এক অন্যায় করেছে তার ওপর আবার আমাকে ইমোশনাল ব্লাক মেল করছে।হুম স্মৃতি ঠিক বলেছে তুমি আর রেগে থেকো না তোমার মায়া ভরা মুখ তাতে রেগে থাকা মানায় না। তোমার মুখে শুধু হাসি সুট করে বুঝলে।আমাদের তুমি মায়ার বাঁধন দিয়ে আগলে রেখেছো। কখনো কোনো কষ্ট পেতো দাও নি।হয়েছে হয়েছে বাবার কাছে যা তখন থেকে পাগল করে দিল বলে বলে মেয়ে গুলো আসেনি। খাবার খাইনি পর্যন্ত কি বলছোটা কি তার মানে ওষধ ও খায় নি।
বাবার কাছে গেলাম কি বাবা কিছু খাওনি কিসের জন্য ওষুধ খাবে কে?তোদের ছাড়া আমি কখনোও খেয়েছি। আজকে অফিসে একটু কাজ ছিলো তাই দুপুরে আসিনি। মা তুমি খাবার নিয়ে এসো জানি তুমি ও খাওনি তোমাদের নিয়ে আর পারি না বুঝছো।সবাই একসাথে খেয়ে নিলাম আমি অল্প পরিমাণ খেলাম কারণ আমার পেট ভরা। কিন্তু মায়ের হাতের রান্না না খেলে মন ভরেনা এখন মন পেট দুটােয় ভরা।

দুইবোন সুয়ে আছি স্মৃতি আমাকে বললো জানো তো আমার ফেন্ড আছে নিমকি ওই এবার পরিক্ষাটা দিবে না ওর বাবা ওর বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে।কিন্তু কেন?
বিয়ে হচ্ছে হোক সেটা ব্যাপার না পরিক্ষাটা দিতে দিবে না কেন?জানোতো ওর যার সাথে বিয়ে ঠিক হয়সে না ওর আগের একটা বউ আছে। তাহলে বিয়ে দিচ্ছে কেন?নিমকির বাবা একদম লোভী টাকার বিনিময়ে মেয়ের বিয়ে দিচ্ছে। যার সাথে বিয়ে দিচ্ছে সে একটা খুব খারাপ মানুষ,যে মেয়েকে ওর ভালো লাগে তাকে বিয়ে করে নেয় আবার কিছুদিন পর ডিভোর্স দিয়ে দেই টাকা পয়সা বেশি তাই এমন অবস্থা। আইনের লোক ওর কিছুই করতে পারেনা।সবাইকে টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ রাখে।।আর এখন কার মানুষ তো টাকা ছাড়া কিছুই বুঝেনা মনুষ্যত্ব হারিয়ে ফেলেছে।
আমাকে একবার নিমকির সাথে দেখা করিয়ে দিস।ও কলেজ আসে তো হুমম আজ এসেছিল দিয়ে আমাদের বলছিলো আর খুব কান্না করছিলো।কাল আমি তোর সাথে কলেজ যাবো তারপর নিমকির সাথে কথা বলবো।এখন ঘুমা আমিও ঘুমাবো কালকে অফিস আছে।

সকালে নামায সেরে সকলের জন্য চা বানালাম।বাবা মাকে চা দিলাম।

১০টায় অফিস স্মৃতি কে ঘুম থেকে উঠলাম বললাম তুই নিমকি কে ফোন দে ওকে আজ একটু তাড়াতাড়ি আসতে বল আমি অফিস যাওয়ার আগে কথা বলবো ওর সাথে। দেখি ওর বাবাকে টাইট দিতে পারি কিনা।

স্মৃতি নিমকির সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। শোনো নিমকি একদম কান্নাকাটি না আমি সব জানি তোমার ব্যাপারে, আমি তোমার বাজে লোকটার সাথে কিছুতেই বিয়ে হতে দিবনা।তুমি শুধু ভয় পাবে না। তেমার বাবার ফোন নাম্বারটা দাও। তোমার আম্মু কিছু বলেনা। আম্মুর গায়ে হাত তুলে আম্মু কিছু বললেই। আপু আপনি যে আমকে সাহায্য করবেন আমি সারাজীবন কৃতঙ্গ হয়ে থাকবো। এভাবো বলছো কেন পৃথবীতে যেমন বাজে মানুষ আছে তেমনি ভালো মানুষ আছে।আর মায়ার বাঁধন বলে কথা আছে জানো তো আমরা কখন কীভবে কার মায়ার বাঁধনে জড়িয়ে পড়ি ঠিক আছে। পৃথিবটা হচ্ছে মায়াময় কেন্দ্র। আর তুমি তো আমার ছোট বোনের মতো। স্মৃতির মতো তুমিও আমার ছোট বোন।আর একেবারে টেনশন করবে না নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ কিছু না কিছু ব্যবস্থা হবে।

অফিসে এসে নিজের কেবিনে বসলাম। আংকেল ফোন করে তার কেবিনে ডাকলো। আজকে তোমাকে একটা ফাইল জায়িদের কাছে পৌছে দিতে হবে। আংকেল আমি কেন অন্য কাউকে যেতে বলো আমি যেতে পারবোনা।তুমি জানো আমি তোমাকে কতটা ভরসা করি আর এ ডিলটা হওয়ার সময় তুমি ছিলে তাই তুমি যাবে ডিসিশন ফাইনাল। ওকে আংকেল।
আর গাড়িতে যাও ডাইভারকে ঠিকানা দেওয়া আছে পৌছে দিবে।

কি করবো ইচ্ছা করছেনা আমার ওই অভদ্রোচিত লোকটার মুখোমুখি হতে। আংকেল যেহেতু বলেছে যেতেই হবে।।।

চলবে……

What’s your Reaction?
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0

Leave a Reply