প্রকৃতির কাছ থেকে পাওয়া সব বস্তুই প্রাকৃতিক সম্পদ। মানুষ প্রকৃতি থেকেই এসব সম্পদ আহরণ করে। এর ফলে মানুষের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক জীবনের অগ্রগতি ঘটে। প্রাকৃতিক সম্পদ পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করলে দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব। প্রকৃতির মধ্যে নানা মূল্যবান সম্পদ রয়েছে। যেমন:- পানি, বায়ু, মাটি, গাছপালা, জীবজন্তু, ফসল, খনিজ দ্রব্য ইত্যাদি। এসব প্রাকৃতিক বস্তুকে মানুষ নিজেদের চাহিদা মতো রুপান্তরিত করে ও কাজে লাগায়। মাটি বাংলাদেশের মুল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ। এদেশে সমতল ভূমি খুবই উর্বর। বেশির ভাগ এলাকায় বছরে তিনটি ফসল উৎপন্ন হয়। দেশের ১০ ভাগের এক ভাগ অঞ্চল পাহাড়ি এলাকা। পাহাড়ে প্রচুর প্রাণিজ, বনজ, ও খনিজ সম্পদ রয়েছে। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এদেশে ছোট-বড় অনেক নদী আছে। নদীগুলো মালামাল পরিবহনের সহজ মাধ্যম। নদীর পানি-প্রবাহ থেকে বিদ্যৎ উৎপাদন করা যায়। এছাড়া বিপুল পরিমাণ মৎস্য সম্পদ রয়েছে আমাদের নদ-নদীতে। বাংলাদেশের মাটির নিচে রয়েছে নানা রকম মল্যবান খনিজ সম্পদ। এগুলোর মধ্যে কয়লা, গ্যাস, চুনাপাথর, চিনামাটি, সিলিকা বালি উল্লেখযোগ্য।
বাংলাদেশের মোট বনভুমির পরিমাণ ২৪৯৩৮ বর্গ কিলোমিটার। দেশের মোট ভূ-ভাগের 16 ভাগ হচ্ছে বন। বনে রয়েছে মূল্যবান গাছ পালা। এগুলো আমাদের ঘরবাড়ি ও আসবাব তৈরীর কাজে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া বনে রয়েছে পাখি ও প্রাণিসম্পদ। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য বনের গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের আরো বেশি অর্থাৎ ২৫ পার্সেন্ট বনভূমি থাকা প্রয়োজন। বাংলাদেশের অনেক নদ-নদী খাল-বিল ও দেশের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর রয়েছে। এসব খাল-বিল নদ-নদীতে রয়েছে প্রচুর মিঠা পানির মাছ। এছাড়া সামুদ্রিক মৎস্য আমাদের খাদ্যের চাহিদা পূরণ করছে। মাছ ধরে বহু মানুষ জীবিকা অর্জন করছে। আমাদের প্রাণিসম্পদের মধ্যে রয়েছে গরু মহিষ ছাগল ভেড়া হাঁস মুরগি প্রভৃতি। এগুলো গৃহপালিত প্রাণী। এছাড়াও রয়েছে নানা প্রজাতির প্রচুর পাখি। বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চল জুড়ে বঙ্গোপসাগর। সাগর তীরে গড়ে উঠেছে চট্টগ্রাম মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দর। সাগরের পানি থেকে আমরা লবণ উৎপন্ন করি। তাছাড়া সাগর থেকে আহরন করি প্রচুর মাছ। এগুলো আমাদের গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ।
Writer: Humayra Hanna