“গ্লোবাল ওয়ার্মিং”শব্দটি বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে। জ্বলিত জীবাশ্ম জ্বালানী কিংবা বৃক্ষ উজাড় এর জন্য কার্বন ডাই অক্সাইড এর পরিমান অনেক বেড়ে যায়।ভূমন্ডল ও বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি পেয়ে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ভয়ানক হারে বেড়ে যায় আর সেজন্যই মেরু অঞ্চল তথা এন্টার্কটিকার বিশাল বিশাল বরফের পাহাড় গুলো ধীরে ধীরে গলে গিয়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়িয়ে দিচ্ছে।যার প্রভাব পৃথিবীর দ্বীপ রাষ্ট্র গুলোর উপর ভীষণভাবে পড়তে পারে।বাংলাদেশ পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপ।
যুক্তরাজ্যের একদম বিজ্ঞানী ৯০ এর দশকে এবং ২০০০ সালের মধ্যে ৫৬’টি উন্নয়নশীল দেশের বন্যার ঘটনা বিশ্লেষণ করে বলেছিলো ওই সময়কালীন সময়ে সে দেশগুলোতে প্রায় ১ লক্ষ মানুষ শুধু বন্যাজনিত কারণের মৃত্যুবরণ করেছে এবং ৩২০ মিলিয়ন মানুষ পরবেশ বিপর্যয়ে উদ্বাস্তু হয়েছে। তাদের আশংকা ২০৫০ সালের মধ্যে ভূমধ্যসাগরের তীরের দেশ মালয়েশিয়া বাংলাদেশসহ দ্বীপগুলো সাগরের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার অবশ্যম্ভাবনীয় সম্ভাবনা লক্ষ করা যেতে পারে।নাসা সম্প্রতি এ ব্যপারে সতর্ক করে দিয়েছে।
বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত তালিকায় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে ঝুঁকিপূর্ণ ১২টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান দশম। ২০০৭ সালে ইউনেস্কোর প্রতিবেদন ছিলো,সমুদ্রস্তরের ৪৫ সেন্টিমিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে সুন্দরবনের ৭৫ শতাংশ ডুবে যেতে পারে।২০১৮ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিলো সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ২৩’শত সালের মধ্যে ০.৭ থেকে ১.২ মিটার বেড়ে যাবে।
এনভায়রনমেন্ট বিষয়ক বিখ্যাত জার্নাল নেচার কমিউনিকেশন্সে প্রকাশিত এই গবেষণায় আরো বলা হয়েছে,কার্বন ডাই-অক্সাইডের উদিগরণের মাত্রা শূন্যে নামিয়ে আনতে যদি অনেক দেরি হয়ে যাত,তবে ২০২০ সালের পর থেকে প্রতি পাঁচ বছরের জন্য ২০ সেন্টিমিটার করে পানির উচ্চতা বাড়বে। আগামী কয়েক দশকে কার্বন নির্গমন কমাতে পারলে এই পরিণতি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।সেজন্য বাংলাদেশকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার পথ অতি দ্রুত বিস্তৃত করতে হবে।
লেখকঃSania Tuhfa