খবর
দু-একটি কুকুর শুধু, কয়েকটা কাক-চিল
স্কুল-মন্দির-মসজিদগুলি উদ্বাস্তু শিবির
হাসপাতালে আহত ও আর্তদের ব্যান্ডেজ বাঁধা
হাত-পা-মাথা ও ভবিষ্যৎ
কোলের সন্তানের হাহাকার
তপন-সুকুর আলি ধরা পড়েছেন
১
সদর্পে পিষে যাচ্ছে রোলার
চাকার তলায় মাংস
গুঁড়ো গুঁড়ো
মানুষের হাড়
২
কেউ মাথা তুলতে পারছে না
মাথায় চেপে বসছে ঘাতক
আমাদের সকরুণ দীর্ঘশ্বাসে
শুধুই কাঁপছে প্রহর
৩
বিষে-বিষে কেঁদে উঠছে ভ্রূণ
চাঁদও মাওবাদী আলো
পতাকায় কারা রক্ত লাগাল?
শরণার্থী শিবিরে আগুন!
৪
মাটি ও মায়ের গর্ভে
দু’মুঠো অন্নের গান
কৃষকের ঘরে ঘরে
আমরাও ছিলাম
৫
আজ সবাই পথে বেরোলাম
পথও ইজ্জত কেড়ে খায়
বন্দুকের নল গর্জে ওঠে
ধর্ষণের যন্ত্র শান দ্যায়
৬
লাশের ওপর দিয়ে উন্নয়ন আসে
গণতন্ত্রের রাজমুকুট জ্বলে
আলোয় আলোয় নহবত
রক্তে হাসে রক্তকরবীর মাঠ
৭
দৈত্যভূমির এই নির্বাসিত দ্বীপে
মৃত রঞ্জনের পাশে নন্দিনী শুয়েছে
সারারাত ধুলো-বৃষ্টি
অশনির করাল সংকেতে
৮
দুঃশাসন দুর্নীতির অস্ত্র নিয়ে হাতে
কোন্ যুদ্ধে নেমেছে কাপুরুষ?
ক্রমশ ডুবে যাচ্ছে সূর্য
মেদিনীপুরের রক্ত মেখে
৯
আমাদের আর্তনাদ ঘৃণা-থুথু হয়ে
উড়ে যাচ্ছে আকাশের মেঘে
আমাদের অশ্রু বৃষ্টি হয়ে
নেমে আসছে নদীতে সাগরে
১০
হে বন্দুক, হে গর্জন, হে মৃত্যু সঞ্চালক
কোন্ পথ দেখাবে আজ?
পথ জুড়ে বুভুক্ষু সম্ভ্রমহীন
আর সব মিথ্যুক তঞ্চক
১১
শান্তির প্রস্তাব ওড়ে অশান্ত বিকেলে
ভেন্ডালের চোখে ছদ্ম জল
রবীন্দ্রসঙ্গীত পুড়ে গেলে
স্বরলিপি মুঠো মুঠো ছাই
১২
সারি সারি মানব কঙ্কাল
ধূসর প্রচ্ছদে আঁকা দ্রব ইতিহাস
বিচ্যুতির নষ্ট ফাল্গুনে
তাপসী মালিকরা পুড়ে যায়
১৩
কে যায়? ঘর-দোর শুনশান
মিছিলের শোভা দ্যাখে গ্রাম
শোভায় বিষণ্ণ কাঁদে
আশ্বাসও ভঙ্গুর প্রত্যয়
১৪
ঝাঁক ঝাঁক লোহার পাখি
মেধা ও মগজ খুঁটে খায়
জমি বাঁচাও অথবা প্রতিরোধ কমিটি
এখনো কি রাত জাগে বাঁধে?
১৫
গুলি খায়, সিঙ্গুরের রাস্তায়
অথবা বাঁধের জলে, সোনাচূড়ায়
তেখালি, সাতেঙ্গাবাড়ি অথবা
রানিচকে… ঘোর আস্ফালন…
কাদের হুংকার ছুটে আসে?
১৬
আতঙ্কের ক্লাসে ঘন্টা বাজে
কী পাঠ দ্যায় সেলিম লস্করেরা?
হানিফ, হাফিজ, সইদুল…
একে একে দাঁড়িয়েছে ক্লাসরুম ঘিরে!
১৭
কোথাও পালাবার রাস্তা নেই
সারাদেশ বধ্যভূমি, ১৪ ই মার্চ
রাজনীতির ক্রুশে বিদ্ধ হয়ে
নিরীহ যিশুরা বধ হয়
১৮
যিশুদের রক্তে শপথ ভেসে ওঠে
চলো শব্দে শব্দে দীপ জ্বালি
আমাদের ব্যাপ্ত প্রতিবাদে
সমস্ত লেখনী আজ অব্যর্থ তরবারি
১৯
নিজের ছায়ার পাশে নিজেই প্রেরণা
মাটি ও মায়ের কাছে স্বপ্নের বন্দনা
ক্ষত ধুয়ে ব্যথা ধুয়ে চক্রের আয়ুধে
প্রহরীর বেশে একা দাঁড়িয়েছি এসে।
ভণিতা
দু-হাজার সাত সাল চারিপাশে দরজাল
মানুষের সব কেড়ে নামিয়েছে রাস্তায়
আমি তৈমুর খান সময়ের সন্তান
অদ্ভুত আঁধারের পদাবলি গাই।
Writer: তৈমুর খান