অতীতকে প্রাধান্য দিও না, ভবিষ্যত নিয়ে দিবাস্বপ্নও দেখবে না। তার চেয়ে বরং বর্তমান মুহূর্ত নিয়ে ভাবো।

— গৌতম বুদ্ধ

ঈশ্বরপুত্র

একদিন বিকেল শেষ হলে চলে যাব

মুক্তপুরুষ।

বেদির উপর ফুল ও বেলপাতা

পড়ে থাকবে।

সিঁদুর রঙের মেঘে লুকিয়ে যাবে দিন।

রাতের বিছানা পেতে শোবে সাজু ও রূপাই।

হে বাংলা ভাষা, ঘরে ঘরে বাংলাদেশ

পাঠাও।

সত্যের অভাবে সব মিথ্যা কিনে নেয়

পোশাক-আশাকে দেশ কেন আজ

ধর্মীয় সৈনিক?

বিকেল শেষ হলে চলে যাব

এক গ্লাস জল চেয়ে দরজায় দরজায়

রবীন্দ্রনাথের পদছাপ খুঁজে ফিরি

আলগোছে বিরহিণী কাল

আমাকে কোলে নেয় জুন মাস

দু-হাজার আট সাল

জীবনের পাখি নামছে সমূহ সন্ধ্যায়

রক্ত-ভেজা ডানা আর মৃত হাসিমুখ

কোন্ শস্য খেতে এসেছিল?

কেবল শিল্পায়নের ঝড়ে বেড়েছে অসুখ

দিকচিহ্ন মুছে গেছে

উদ্ভ্রান্ত ডালপালা, উপড়ানো শিকড়ে

ফুটে উঠেছে সব আগুনের ফুল

কোথায় দাঁড়াব? ত্রিভুজ শহরে

কোথাও মানুষের সিলেবাস নেই

ফাঁকা ও জরাজীর্ণ স্কুল

ঘন্টা বাজিয়ে দিচ্ছে ছুটির শৃগাল

এক চিলতে সাধুভাষা আর সব মাগধী প্রাকৃত

শবরীর ঘরে যেমন ব্রাহ্মণ নাড়িয়া

পবিত্র করে রাখে তার উপবীত

বিজ্ঞান যদিও তৎসম জানে না

রাজনীতি জানে ধর্ম? নরাধমের শাসনে

এখনো আমরা আছি

সংবিধান আমাদের কিছুই বলছে না!

দু পায়ের ফাঁক দিয়ে গলে যাচ্ছে নদী

নদীকে দেখেছি কোন্ কিশোরবেলায়

তখনো ওপার হতে নৌকায় চাপিনি

এখন তার প্রৌঢ় ঢেউ, ধ্বস ছাড়া কিনারা

চোখে-চোখে জলীয় করুণা

বন্যা দাও, বন্যায় ভাসা লাশ

লাশের ভিতরে রাখো জীবন্ত উল্লাস

উল্লাস কি ইতিহাস চেনে?

সাংবাদিক জানে শুধু লাশের হিসাব

ক্যামেরাম্যান্ কিছুটা নিসর্গ টেনে আনে

সকালের খবর: সেতু ভেঙে ওপর থেকে

খাদে পড়া বাস….

দু পায়ের ফাঁক আরও বড় হচ্ছে

পায়ের ফাঁকে ঢুকছে আকাশ

বন্যা ও বাসের দুর্ঘটনা

মিলেমিশে হয়ে যাচ্ছে হাঁস

যদিও হাঁসজারু আমরা অনেক দেখেছি

আমাদের পাড়ায় থাকেন সুকুমার রায়

ছড়া ও কবিতা মিলে লেখেন ছবিতা

অথবা গল্প-উপন্যাস মিলে গপোন্যাস

সারাদিন রক্তবমি দিশেহারা জল

দহন ছড়িয়ে দেয় মহান মাতাল

গ্রীষ্মের হাতি ছোটে বিশ্বের ঘরে

দৃশ্য চমকায় নিঃস্ব মুকুরে

হালকা মানব মেঘে আকাশ সবুজের

নিকট ভারসাম্য রাখে সন্দেহ সুদূর

মোবাইল অফ করা টাওয়ার চ্যাঁচায়

সংকেত পাঠাবে কোথায় ঈশ্বর জানে না

আমরা ঈশ্বরপুত্র মানব-কাঙাল

চলে যাচ্ছি অশ্রু মুছে গোধূলির দিকে

একটি সকাল

ভাঙা-খাট বালিশ-তোশক সব পড়ে রইল

নতুন দু-জোড়া চপ্পল

আধপোড়া কাঠ, ঘর, ঘরের চাবি

বাচ্চার টুকটুকে লাল…

তৈমুর খান, রামরামপুর( শান্তিপাড়া), ডাকঘর রামপুরহাট, জেলা বীরভূম, পিন নাম্বার: 731 224, ফোন:9332991250

What’s your Reaction?
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0
+1
0

Leave a Reply